অর্ণব দাস, বারাকপুর: পণের দাবিতে মারধর, আদায়ের জন্য চাপ। এসব অভিযোগে দাম্পত্য অশান্তি লেগেই থাকত। সেই অশান্তিই কি ডেকে আনল মৃত্যু? বেলঘরিয়ার কলাবাগান এলাকায় এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে এই প্রশ্ন উঠছেই। ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর বেলঘরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে যেসব তথ্য হাতে পেয়েছে, তাতে পণের দাবিতে খুনের অভিযোগ উঠছে। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
কলবাগান এলাকার বাসিন্দা সুজিত দে-র সঙ্গে বছর দুই আগে বিয়ে হয় সঙ্গীতা নামে এক তরুণীর। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে বিবাদ লেগে থাকত সঙ্গীতার। মারধরও করা হতো তাঁকে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শনিবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র ঝগড়াঝাঁটি হয়েছিল। এরপর রাতেই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় সঙ্গীতার ঝুলন্ত দেহ। খবর পাঠানো হয় সঙ্গীতার বাপেরবাড়িতে। তাঁর মা, দিদিরা ছুটে যান। মেয়ের মৃতদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। বারবার গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ তোলেন।
ঘটনা নিয়ে প্রতিবেশী রাজেশ রাজভর জানান, ”ওদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় খুব ঝগড়া হতো। মারধরও হতো। আগে একবার মেরে বউয়ের মুখ ফাটিয়েছিল। সেদিন খুব ঝামেলা হয়। মারামারিও হচ্ছিল। আমরা দু’জন ওদের থামাতে যাই। কিন্তু ও (সুজিত) এমন মারছিল যে আমরা থামাতেই পারছিলাম না। বউয়ের নাকে-মুখে খুব আঘাত করছিল। আগেও এরকম করেছে। এবার খুব বাড়াবাড়ি করেছিল। অত্যাচার হতো বউয়ের উপর। এখন কী কারণে মারা গিয়েছে, তা বলতে পারব না।”
মৃতার মা পার্বতী রাজভরের অভিযোগ, ”টাকাপয়সা চেয়ে আগেও ওরা মেয়েকে মারধর করত। খেতে দিত না। দু’বছর ধরে টানা এমনটা চলছে। এবার মেয়েটাকে মেরে ফেলল! আমরা এর বিচার চাই।” মৃতার দিদি অনিতা রাজভর বলেন, ”ওদের মধ্যে ঝগড়া-মারামারি লেগেই থাকত। আগে একবার শ্বশুর, ননদ, স্বামী মিলে মেরে বোনের মুখ ফাটিয়ে দিয়েছিল। এবার শুনছি, মেরে নাকি ওকে (সঙ্গীতা) আলমারির পাশে ছোট একটা জায়গায় ঠেলে ফেলে দিয়েছিল।” বেলঘরিয়া থানায় এনিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.