বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: পেশায় গাড়ির চালক। বাবা-মা নেই। তবে প্রেমের সম্পর্ক ছিল একটি মেয়ের সঙ্গে। বাবা, মা না থাকায় বেশিরভাগ সময় গাড়ির মালিকের কাছেই থাকতেন এক যুবক। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি থেকে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবক তাঁকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি যুবকের। শুক্রবার সকালে তাঁর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নদিয়ার হরিণঘাটা থানার সিমহাট এলাকায়।
[ মমতার গতিধারা নিয়ে আগ্রহী যোগীর রাজ্যও ]
মৃত যুবকের নাম প্রদীপ বিশ্বাস (২৩) ওরফে কালটু। সূত্রের খবর, শুক্রবার সকালে তাঁর পরিবারের লোকজন খবর পায় যে, হরিণঘাটা থানার বড় জাগুলির গ্যাস গোডাউনের কুটিরপাড়া এলাকায় একটি বাঁশঝোপের মধ্যে প্রদীপের ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। প্রদীপের মা মারা গিয়েছেন। বাবা বহু আগেই পরিবার ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। দাদু ধীরেন মজুমদার ও মাসি পম্পা দাসের কাছেই তিনি মানুষ হন। বাপ্পা নামে এক ব্যক্তির গাড়ি চালাতেন প্রদীপ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মুখেও রয়েছে কাটা দাগ। প্রাথমিক তদন্তে মৃতদেহ বাঁশঝোপের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে আত্মহত্যা বলে অনুমান করা হয়েছিল। কিন্তু মৃতের পরিবারের অভিযোগ, প্রদীপকে রীতিমতো ষড়যন্ত্র করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে প্রদীপ যার গাড়ি চালাতেন, সেই বাপ্পা নামে এক যুবক জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
[ ‘তৃণমূল হটাও, দেশ বাঁচাও’ স্লোগানে পরিবর্তনের ডাক রাহুল সিনহার ]
মৃতের মাসি পম্পা দাসের অভিযোগ, ‘একটি মেয়ের সঙ্গে প্রদীপের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গাড়ির মালিকের কাছেই বেশিরভাগ সময় থাকত। তবে বাড়িতেও আসত মাঝে মাঝে। বৃহস্পতিবার বিকেলেও ওই সময়ে বাড়িতেই ছিল। সেই সময় দু’জন অজ্ঞাতপরিচয় লোক ওঁকে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর আর রাতে বাড়ি ফেরেনি প্রদীপ। সকালে খবর পাওয়া যায় গাড়ির মালিক বাপ্পার বাড়ির কাছেই কুটিরপাড়া এলাকায় বাঁশঝোপের মধ্যে মৃতদেহ পড়ে রয়েছে প্রদীপের।’ পম্পাদেবীর কথায়, ‘পরিকল্পিতভাবে প্রদীপকে খুন করা হয়েছে। এই খুনের সঙ্গে জড়িত ওঁর গাড়ির মালিকও।’ দাদু ধীরেন মজুমদার বলেন, “ওকে যে দু’জন ডাকতে এসেছিল, তার মধ্যে একজন মোটা। ওরাই আমার নাতিকে ডেকে নিয়ে যায়। গাড়ির মালিক বাপ্পা, প্রদীপের প্রেমিকা ও তার মা মিলে আমার নাতিকে পরিকল্পনা করে খুন করেছে। আমি তিনজনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছি। ওদের কঠোর শাস্তি চাই।”
অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হরিণঘাটা থানার পুলিশ। প্রেমঘটিত কারণে প্রদীপকে খুন করা হল না কি এর পেছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। খুনের অভিযোগ দায়ের হলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.