সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: পরিবারের ইচ্ছায় আসানসোলের জখম ডিসিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোরে। গত সোমবার রানিগঞ্জে গোষ্ঠী সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে গুরুতর আঘাত পান আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি সদর অরিন্দম দত্ত চৌধুরি। দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় তাঁর ডানহাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রানিগঞ্জে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তড়িঘড়ি তাঁকে দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর।
সোমবার বিকেলে সেই হাসপাতালেই অরিন্দম বাবুর অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। বুধবার রাজ্য সরকারের নির্দেশে এসএসকেএম ও আরজি করের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যান দুর্গাপুরের ওই হাসপাতালে। তাঁরা চিকিৎসাধীন ডিসিকে দেখেন। চিকিৎসা ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখা হয়। হাসপাতালের পরিস্থিতি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। জটিল অস্ত্রোপচারের একদিন পর ওই পুলিশ আধিকারিকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। পরে ডিসির পরিবারের ইচ্ছায় তাঁকে কোয়েম্বাটোর নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো বৃহস্পতিবার সকাল ৭.৩০ মিনিটে দুর্গাপুর থেকে চিকিৎসাধীন ডিসিকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে গাড়ি। কলকাতা থেকেই বিমানযোগে কোয়েম্বাটোরের যাওয়ার কথা।
এদিকে দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে ডিসির চিকিৎসা চলছিল। বুধবার ডিসির চিকিৎসা পদ্ধতি খতিয়ে দেখতে আর জি কর হাসপাতাল থেকে প্লাস্টিক সার্জন রূপায়ণ ভট্টাচার্য ও এসএসকেএম হাসপাতালের বিশিষ্ট কার্ডিও থোরাসিক ভ্যাসকুলার সার্জন শান্তনু দত্ত দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে আসেন৷ তাঁরা জখম পুলিশ আধিকারিকের চিকিৎসার ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন। পরে দুই চিকিৎসক জানান, “সরকারের নির্দেশেই আমরা ওঁনার চিকিৎসার বন্দোবস্ত খতিয়ে দেখলাম। এই হাসপাতালে যা পরিকাঠামো আছে বা যে পদ্ধতিতে ওঁনার চিকিৎসা হচ্ছে তা একেবারে সঠিক।” তাঁরা ওই পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে কথাও বলেন।
বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে এসেছিলেন বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। রানিগঞ্জে গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে আহত বিজেপি কর্মী চিকিৎসাধীন রয়েছেন এই হাসপাতালে। তাঁকেই দেখতে এসেছিলেন লকেট। এখান থেকে রানিগঞ্জে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁকে বাধা দেয়। এর জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে, মঙ্গলবারের পর বুধবার ফের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হিংসা ছড়ায় আসানসোলে। আতঙ্কের জেরে বন্ধ হয়ে যায় শহর আসানসোলের দোকানপাট। বন্ধ হয়ে যায় বাস চলাচল। শুধুমাত্র সরকারি কিছু বাসকে রাস্তায় দেখা যায়। কার্যত বনধের চেহারা নেয় গোটা শহর। তবে দিনভর গুজবকে কেন্দ্র করে নতুন করে অশান্তি ছড়ায় আসানসোল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়। বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। উত্তেজনা থামাতে গিয়েই ইটের আঘাতে আক্রান্ত হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। উপস্থিত রয়েছেন ৪ জন আইজি পদমর্যাদার অফিসার। এলাকায় রুটমার্চ করে পুলিশ।
ছবি- উদয়ন গুহ রায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.