Advertisement
Advertisement

Breaking News

Exam

অভাবের তাড়নায় বন্ধ লেখাপড়া, ভাইয়ের সঙ্গে মাকেও বোর্ডের পরীক্ষায় বসাল তরুণী

মা ও ভাইয়ের গৃহশিক্ষিক তরুণী নিজেই।

Daughter takes initiative, woman sits for Board exam with son | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:March 1, 2023 8:34 pm
  • Updated:March 1, 2023 8:34 pm  

অর্ক দে, বর্ধমান: একসময় অভাবের কারণে স্কুলছুট হয়েছিলেন। তার পর বিয়ে। সংসারের হাল টেনেই হয়তো জীবনটা কেটে যেত আয়েশার। তাঁর ছেলে পারভেজও অভাবের কারণে স্কুলের পাট চুকিয়ে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন সোনা-রুপোর কাজ করে সংসারের অভাব কমাতে। ইচ্ছা থাকলেও মা-ছেলে বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেননি। পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় থানা ঘাটশিলা গ্রামের বাসিন্দা বছর চল্লিশের আয়েশা বেগম, ১৮ বছরের শেখ পারভেজ আলম, মা-ছেলে দু’জনেই এবার ‘মাধ্যমিক’ পরীক্ষা দিচ্ছেন (মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম)।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, দুজনকে ফের প্রথাগত শিক্ষার আঙিনায় টেনে এনেছেন আয়েশার এমএ পাস মেয়ে ফিরদৌসী খাতুন। দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে উচ্চশিক্ষিত হয়েছেন ফিরদৌসী। তাই সকলের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছতে চান তিনি। কথায় আছে, ‘চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম’। হ্যাঁ, সেটাই করেছেন ফিরদৌসী। নিজের বাড়ির স্কুলছুট মা ও দাদাকে ফের স্কুলমুখী করেছেন। দু’জনই এবার ‘মাধ্যমিক’ পরীক্ষা দিচ্ছেন। আশা ভাল ফলও করবেন তাঁরা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: দ্রুত প্রাথমিকের ৪২০ শূন্যপদ পূরণ, ১৭ এপ্রিলের মধ্যে মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ]

২৫ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল আয়েশার। স্বামী শেখ নূরুল আলম পেশায় একজন কৃষক। সপ্তম শ্রেণির পরই বিয়ে হয়ে যায় আয়েশার। অন্যদিকে, ছেলে পারভেজ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরনোর আগেই পড়াশোনা ছেড়ে দেন। কৃষক পরিবারের মেয়ে হয়েও নিজে সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়েও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে ফিরদৌসী। তিনি কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেছে। মা ও দাদার এই পরিস্থিতি মেনে নিতে পারেনি। মেয়ের জেদের কারণেই মা আয়েশা ও দাদা পারভেজ ভর্তি হন শক্তিগড়ের ঘাটশিলা সিনিয়র মাদ্রাসায়। তাঁদের গৃহশিক্ষক ফিরদৌসী নিজেই। ফিরদৌসী বলেন, “আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যেও আমি পড়া ছাড়িনি। স্নাতকোত্তর পাশ করার পর মনে হয়েছে মা ও দাদার পড়াশোনা নতুন করে শুরু করা উচিত। তারা প্রথমে খুব একটা উৎসাহী ছিল না। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। তাদের বুঝিয়ে শেষ পর্যন্ত দু’জনেই ভর্তি করেছিলাম। এখন পরীক্ষাও দিতে একসঙ্গে যাচ্ছে। বাবাকে বোঝানোর পরেও ভর্তি করা যায়নি। আগামী বছর বাবাকেও ভর্তি করবো।”

আয়েশা বলেন, “একসময় অভাবের কারণেই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলাম। মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যেতাম। মেয়ে অনেকদূর পড়াশোনা করেছে। তাই আমিও আরও পড়াশোনা জানলে ভাল হত বলে মনে হয়েছে। শেষমেষ মেয়ের ইচ্ছাতেই সেই স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়েছি।” মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক তোরাব আলির বলেন, “ফিরদৌসীর ইচ্ছাতেই মা ও ছেলে একসঙ্গে মাধ্যমিকের সমতুল্য হাই মাদ্রাসার পরীক্ষা দিচ্ছে। অন্যান্যদের মতোই তারা পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন। এদের দেখে অনেকে ফের শিক্ষার স্রোতে ফিরে আসার উৎসাহ পাবে।” পারভেজের কথায়, “বোনের জন্যই এই অসাধ্যসাধন সম্ভব হয়েছে।”

[আরও পড়ুন: অ্যাডিনোর জেরে স্থায়ী ক্ষতি একরত্তির ফুসফুসেও, কী পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement