দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বাবা গালিগালাজ করতেন, প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে নাকি মারধরও করতেন। এসব আর সহ্য করতে না পেরে রাগের মাথায় বাবাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল মেয়ের বিরুদ্ধে। উত্তরপাড়ার (Uttarpara) ভদ্রকালীর কবি কিরণধন রোডের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রতিবেশীদের বয়ানের ভিত্তিতে মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এখনও লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় তদন্ত শুরু হয়নি বলে খবর।
মৃত বছর তিরাশির কালীপদ দাস। ভদ্রকালীর কবি কিরণধন রোডের বাসিন্দা রেলের অবসরপ্রাপ্ত এই প্রবীণ। বাড়িতে স্ত্রী গীতাদেবী অসুস্থ, শয্যাশায়ী। মেয়ে কেয়া অধিকারী বিবাহবিচ্ছিন্না। বাবার বাড়িতেই থাকেন ছেলে অভিষেককে নিয়ে। বছর চব্বিশের নাতি অভিষেকের পড়াশোনা-সহ যাবতীয় খরচ এতদিন বহন করেছেন কালীপদবাবুই। জগদ্ধাত্রী পুজোর সকালে এই পরিবারেই আচমকা ঘটে গেল অপ্রীতিকর ঘটনা। মেয়ের হাতেই খুন (Murder) হলেন বাবা! প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সকাল ১১টা নাগাদ এই বাড়ি থেকে বৃদ্ধের চিৎকার শোনা যায়। আশেপাশের বাসিন্দারা উঁকিঝুঁকি দিয়ে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করেন। দেখা যায়, অভিষেক দুটি ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
তা দেখার পরই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। তাঁরা বৃদ্ধের বাড়ি গিয়ে দেখেন, তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। স্থানীয় এক চিকিৎসককে খবর দেন প্রতিবেশীরা। তিনি এসে পরীক্ষা করে জানান, বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেশীদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে মেয়ে ও নাতির উপর। উত্তরপাড়া থানায় খবর পাঠানো হয়। পুলিশ ওই বাড়িতে পৌঁছে মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় মেয়ে কেয়া জানিয়েছে, তার সঙ্গে বাবার অশান্তি লেগে থাকত। মেয়েকে গালিগালাজ, এমনকী মারধরও করতেন বাবা। এদিনও তেমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বাড়িতে। তাতেই কেয়া রেগে বাবাকে পেটায়। তবে তাতে যে বাবার মৃত্যু হবে, তা নাকি ভাবতে পারেনি অভিযুক্ত মেয়ে।
এই স্বীকারোক্তির পর মেয়ে কেয়া অধিকারীকে আটক করে পুলিশ। খোঁজ চলছে নাতি অভিষেক অধিকারীর। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, কালীপদবাবুই মেয়ের ডিভোর্সের পর মেয়ে-নাতিকে নিজের বাড়িতে এনে রাখেন। তাঁদের দেখভালের দায়িত্ব নেন। অভিষেককে বড় করে তুলেছেন তাঁর দাদু। তাই সম্পত্তিগত কারণে পরিকল্পনা করেই কেয়া বাবাকে পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের। আর এই ঘটনায় মাকে সাহায্য করেছে নাতিও। এমনই অভিযোগ প্রতিবেশীদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.