সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিমল গুরুংয়ের পরই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ‘নাম্বার টু’ রোশন গিরি আত্মগোপনের আগে ‘দ্য উইক’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক সব মন্তব্য করলেন। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি গোর্খা নেতাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগকে ভুয়ো বলে উড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন রোশন। আত্মগোপনের আগে এটাই তাঁর শেষ সাক্ষাৎকার।
প্রশ্ন: বিমল গুরুং ও আপনার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা রুজু হয়েছে?
রোশন: সম্পূর্ণ ভুয়ো মামলায় আমাদের ফাঁসানো হয়েছে। এটা বেআইনি। রাজ্য সরকার আমাদের আন্দোলনের গলা টিপে ধরতে চাইছে। একটি গণ-আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
প্রশ্ন: আপনাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিযোগের মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছে রাজ্য?
রোশন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার চাইলেই কি আমরা জঙ্গি হয়ে গেলাম? সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। যদি সাহস থাকে, রাজ্য সরকার কোনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্ত করতে অনুরোধ করুক।
প্রশ্ন: রাজ্য তো একাধিকবার আপনাদের আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছে?
রোশন: গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলবে। যতক্ষণ না নতুন রাজ্যের ঘোষণা হচ্ছে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।
প্রশ্ন: কেন্দ্র নাকি নতুন রাজ্য ভাগে তৈরি, অথচ মমতাই রাজি নন?
রোশন: হ্যাঁ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তো তাই বলেছেন আমাদের। আশা করি, মমতাও রাজি হবেন।
প্রশ্ন: সিকিম সরকার আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে রাজ্য।
রোশন: সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন কুমার চামলিংয়ের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাঁর অবদান আমরা কখনও ভুলব না।
প্রশ্ন: গোর্খা সমর্থকরা বলছেন যে গোর্খাল্যান্ডের দাবি যদি শেষ পর্যন্ত না মেনে নেওয়া হলে আপনারা সিকিমের সঙ্গে যুক্ত হতে চান?
রোশন: ঠিকই। গোর্খাল্যান্ডের দাবি এখন মেনে না নিলেও আমরা আর পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে থাকতে চাই না। সিকিমের সঙ্গে যুক্ত হতে পারলেও আমরা খুশি।
প্রশ্ন: রাজ্য সরকারের অভিযোগ আপনাদের আন্দোলনের পিছনে নেপালের সমর্থন রয়েছে, সেই সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতও রয়েছে। এটা কি সত্যি?
রোশন: রাজ্য সরকার বোধহয় ভুলে যাচ্ছে যে আমরা ভারতের ভিতরেই আলাদা রাজ্য চাইছি, ভারতের বাইরে যেতে চাইছি না। আমরা চিন বা নেপালের কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাইনি। আমরা নিজেরাই লড়তে পরি। এটা সাধারণ মানুষের লড়াই। আমরা এখন যে জায়গায় পৌঁছে গিয়েছি সেখান থেকে পিছু হটার রাস্তা নেই।
প্রশ্ন: বিমল গুরুং কোথায়? তিনি তো ফেরার।
রোশন: বিমল নিরাপদেই রয়েছে। ও আত্মসমর্পণ করবে না। ওকে গ্রেপ্তার করা হলে পাহাড়ে আগুন জ্বলবে। ওকে অ্যারেস্ট করলে রাজ্য খুব ভুল করবে।
প্রশ্ন: বিনয় তামাং-সহ বেশ কয়েকজন নেতা তো গোর্খা থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন।
রোশন: এটা প্রথমবার আমাদের সঙ্গে হয়নি। আগেও এরকম হয়েছে। পাহাড়ের মানুষ বিশ্বাসঘাতকদের ক্ষমা করেন না।
[সৌজন্যে ‘দ্য উইক’]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.