শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: অবশেষে স্বস্তি। ১০ নভেম্বর খুলছে দাড়িভিট হাই স্কুল। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত দুই ছাত্রের পরিবার স্কুল গেটে আন্দোলনের পথ থেকে সরে দাঁড়ানোয় এই ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সামনেই মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা। এছাড়া অন্য শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা রয়েছে। দীর্ঘদিন স্কুলে অচলাবস্থা থাকায় কয়েকদিন আগেও সেই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। প্রশাসনের তরফে এজন্য কয়েক দফায় বৈঠকও হয়। কিন্তু সমস্যার জট কাটেনি। অবশেষে স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকমহল এগিয়ে আসায় সেই অনিশ্চয়তার মেঘ কাটল। দাড়িভিট স্কুল পুজোর ছুটির পরই খুলতে চলেছে।
[বিয়েতে রাজি নয় প্রেমিক, অভিমানে আত্মঘাতী কিশোরী]
বুধবার নিহত ছাত্র তাপস বর্মনের বাবা বাদল বর্মন বলেন, “১৯০০ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্কুল থেকে ধরনা, আন্দোলন তুলে নিচ্ছি। আমরা চাই, অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ উজ্জল হোক। তাই ছেলে হারানোর যন্ত্রণা বুকে চেপে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।” উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা বলেন, “খুব ভাল খবর। নিহতদের পরিবার ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই স্কুল খুলতে সহযোগিতা করবেন। তাই আর কোনও বাধা রইল না।” এদিকে এদিন সন্ধ্যায় নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে গ্রামবাসীরা মোমবাতি হাতে নিয়ে মিছিল করেন। সেই মিছিল দাড়িভিট থেকে মাঠপাড়া হয়ে দোলঞ্চা নদীর পাড়ের শ্মশানে যায়। সেখানে প্রদীপের শিখার সামনে নিহত তাপসের বাবা বাদল বর্মন এবং রাজেশের বাবা নীলকমল সরকার এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন দাড়িভিট হাইস্কুলে পাঠরত পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। সেখানে নিহত তাপসের বাবা বাদল বর্মন বলেন, “ছেলে আর ফিরে আসবে না। আমরা সুবিচারের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাব। কিন্তু অন্য ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্কুলের সামনে থেকে ধরনা-আন্দোলন তুলে নিয়ে স্কুল গেটের চাবি এবং দাবিপত্র ১০ নভেম্বর প্রশাসনের হাতে তুলে দেব। সেইসঙ্গে স্কুল চালুর জন্য সহযোগিতা করব।” তবে নিহত দুই ছেলের সিবিআই তদন্ত এবং ধৃত আটজন গ্রামবাসীকে নিঃর্শতে মুক্তির দাবি থাকবে। ১৩ নভেম্বরের মধ্যে মুক্তি না দিলে ফের আন্দোলন করা হবে বলে জানান তিনি।
[চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ, হাসপাতালে বিক্ষোভ রোগীর আত্মীয়দের]
এদিনের মিছিলে নিহত তাপস বর্মন ও রাজেশ সরকারের বাবা-মা বাদল বর্মন ও মঞ্জুদেবী এবং নীলকমল সরকার-সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পা মেলান। ছিলেন গুলিতে জখম দশম শ্রেণির ছাত্র বিপ্লব সরকারের বাবা গৌরাঙ্গ সরকার, পুন্ডিতপোতা (২) পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্য সুবোধ মজুমদার, প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য শক্তি মজুমদার। জানা গিয়েছে, এদিন দাড়িভিট স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিল মণ্ডলের নেতৃত্বে ১০ শিক্ষক নিহত রাজেশ সরকারের বাড়িতে যান। সেখানে রাজেশের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর সন্ধ্যায় মোমবাতি মিছিলে শামিল হন। সেখানেই স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.