বাবুল হক, মালদহ: মঞ্চে চলছে স্বল্পবসনা দুই তরুণীর চটুল নাচ। নিচে ঝোলানো রয়েছে তৃণমূলের ফেস্টুন। তাতে নয়া নাগরিকত্ব আইন (Citizenship Amendment Act, 2019) ও এনআরসি বিরোধী প্রচার। সেই ফেস্টুনে ব্লকের স্থানীয় কয়েকজন নেতার ছবি। দুই তরুণীর চটুল নাচের মাত্র ১৪ সেকেন্ডের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর মালদহের রাজনৈতিক মহলে। যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
সোমবার ওই ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করেন শাহিদুল ইসলাম নামের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র। তিনি মালদহের বাসিন্দা। সম্প্রতি ওই ছাত্র উত্তর মালদহের শামসিতে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে একাই অবস্থানে বসেছিলেন। তিনি ওই চটুল নাচের ভিডিওটি পোস্ট করে ফেসবুকে লিখেছেন, দেশের জ্বলন্ত সমস্যাকে তৃণমূল কতটা নিচে নামিয়ে এনেছে তার দৃষ্টান্ত এটি। শাহিদুল ওই পোস্টে আবার যুব নেতা বুলবুল খানকে ট্যাগও করেন। যদিও তৃণমূল দাবি করেছে, স্থানীয় একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালের দিন ওই মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে কলকাতা থেকে ‘চিয়ার গার্ল’দের আনা হয়েছিল। ফেসবুকে পোস্ট করা ওই ভিডিও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মঞ্চে দুই স্বল্পবসনা তরুণীর নাচ চলছে। নিচে ফেস্টুনে CAA, এনআরসি বিরোধী প্রচার। সেই ফেস্টুনের যেসব নেতাদের ছবি রয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন হলেন জেলা যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি বুলবুল খান এবং অন্য আরেকজন আশরাফুল হক। আশরাফুল হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির স্বামী। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, সুলতাননগরে গত ১২ বছর ধরে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়ে আসছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ছিল ফাইনাল খেলা। মঞ্চটি যে সিএএ-র প্রচারের জন্য নয়, তা দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। মঞ্চের উপরে ফেস্টুনে বিশ্বনাথ ঝাঁ মেমোরিয়াল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট লেখা রয়েছে। লেখা রয়েছে ক্লাবের নামও। এলাকার সবথেকে বড় ওই টুর্নামেন্টে দর্শকদের বিনোদনের জন্য প্রতিবছরই চিয়ার লিডারদের আনা হয়।এটা নতুনও নয়। যে ক্লাবের পরিচালনায় ওই টুর্নামেন্ট হয় তার সম্পাদক বুলবুল খান।
যুব নেতা বুলবুল খান বলেন,”ফাইনালে পুলিশ, প্রশাসন থেকে সর্বস্তরের মানুষ হাজির ছিলেন। তাঁরাও দেখেছেন, মঞ্চে শালীনতা বজায় রেখেই চিয়ার লিডারদের অনুষ্ঠান হয়। আমি সারাক্ষণ মাঠে ছিলাম না। পরে মঞ্চের নিচে ওই ফেস্টুন কোনও কর্মী রেখেছিলেন নাকি তা এডিটিং, খোঁজ নিয়ে দেখছি। আমি পুলিশকে অভিযোগ জানাব। এটা আমাকে বদনাম করার জন্য ফেসবুকে পোস্ট করেছে।” আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্র শাহিদুল অবশ্য বলেন, “একজন রুচিশীল ছাত্র হিসাবে দৃষ্টিকটু লেগেছে বলেই ফেসবুকে প্রতিবাদ করেছি। ওই মঞ্চ সিএএ-র প্রতিবাদের মঞ্চ হতে পারে না। ওরা তো আন্দোলনকে এভাবে দুর্বল করে দিচ্ছে। আর ক্রিকেটের মঞ্চ হলে ওই ফেস্টুন সামনে কেন?” হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি হজরত আলি বলেন, “ওটা ক্রিকেটের মঞ্চ ছিল। সেখানে দলের কোনও কর্মসূচি ছিল না। মাঠে CAA বিরোধী প্রচারের জন্য কোনও কর্মী ফেস্টুন ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এটা নিয়ে তৃণমূলের বদনাম করলে আমরা আইনের পথে যাব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.