Advertisement
Advertisement

Breaking News

ketugram

কালনার পর কেতুগ্রাম, মহাদেবের পুজো দেওয়ার বাধা রইল না দলিতদের

দু'পক্ষের মধ্যে আলোচনার পর মন্দির কমিটি আবেদনকারীদের দাবি মেনে নিয়েছেন।

Dalits are allowed to enter in Mahadev temple in ketugram

কেতুগ্রাম বিডিও অফিসে চলছে বৈঠক। সোমবার।

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:March 25, 2025 6:48 pm
  • Updated:March 25, 2025 7:11 pm  

স্টাফ রিপোর্টার, কাটোয়া: দলিতদের প্রবেশাধিকার ছিল না আরও একটি শিবমন্দিরে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সেখানেও এবার পুজো দেবেন দলিতরা। কাটোয়া থানার গীধগ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দাদের গ্রামে শিবমন্দিরে পুজো দেওয়ার অধিকার ছিল না। বেশ কিছুদিন ধরে টানাপোড়েনের পর প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ৩৫০ বছরের প্রথা ভেঙে দলিতরা দেবতার পুজোর অধিকার পেয়েছেন। বর্তমানে একই সঙ্গে গীধেশ্বর শিবের পুজো দিচ্ছেন সকলেই।

কিন্তু শুধু গীধগ্রামেই নয়, কাটোয়া মহকুমা এলাকার আরও কয়েকটি শিবমন্দিরে দলিতদের পুজো দিতে দেওয়া হয় না। গাজনের সময় ভক্ত হওয়ার অধিকারও ছিল না তাঁদের। চৈত্রমাসের গাজন উৎসবের আগে এনিয়ে সোচ্চার হয়েছে রবিদাস রুইদাস, ঋষিদাস বাইন মহলদার চর্মকার চামার মুচি ঐক্য মঞ্চ।

Advertisement

‘রবিদাসীয়া মহাসংঘ’-এর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে কাটোয়া থানা এলাকার আরও একটি ও কেতুগ্রাম থানা এলাকার পাঁচটি গ্রামের নাম উল্লেখ করে ওই গ্রামের শিবমন্দিরে দাস সম্প্রদায়ের মানুষদের পুজোর সমাধিকারের দাবি জানানো হয়েছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার কেতুগ্রাম ২ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিল্লেশ্বর গ্রামের শিবমন্দির কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক হয়। কেতুগ্রাম ২ বিডিও শাশ্বতী দাস জানান, দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনার পর মন্দির কমিটি আবেদনকারীদের দাবি মেনে নিয়েছেন। সবাই সমানভাবে পুজো দেবেন।

উল্লেখ্য, কেতুগ্রামের গঙ্গাটিকুরি শিবমন্দির কমিটিকে নিয়ে দু’দিন আগে বৈঠকে বসে একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রবিদাসীয় মহাসংঘের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক ঋষি রামপ্রসাদ দাস বলেন, “শুধুমাত্র কাটোয়ার গীধগ্রামেই নয়, সারা রাজ্য জুড়ে বেশকিছু মন্দির রয়েছে যেসব মন্দিরে চামার, মুচি সম্প্রদায়ের মানুষদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। পুজো করতে দেওয়া হয় না। এরকম বেশকিছু এলাকার ও মন্দিরের তালিকা উল্লেখ করে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাই। ইতিমধ্যে আরও কিছু কিছু এলাকা থেকে এই ধরনের অভিযোগ আসছে। তবে আমরা ইতিমধ্যেই সদর্থক ফল পাচ্ছি। আমরা চাই পুজো করার অধিকারের পাশাপাশি সমাজের সকল মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকে।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিদাসীয় মহাসংঘের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে যে অভিযোগ জানানো হয়েছিল, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে কাটোয়া ১ ব্লকের চন্দ্রপুর গ্রামে ধর্মরাজ মন্দিরে উঠতে দেওয়া হয় না চামার, মুচি সম্প্রদায়ের মানুষদের। এছাড়া কেতুগ্রাম থানার ঝামোটপুর গ্রামে শিবের গাজনে ভক্ত হতে বা অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয় না। কেতুগ্রামের গঙ্গাটিকুরি গ্রামে শিবমন্দিরে উঠতে বা গাজনে ভক্ত হতে দেওয়া হয় না। কেতুগ্রামের নিরোল গ্রামে শিবমন্দিরে উঠতে দেওয়া হয় না। কেতুগ্রামের বিশ্লেশ্বর ও আগরডাঙ্গা গ্রামে শিবমন্দিরে উঠতে দেওয়া বা গাজনে ভক্ত হতে দেওয়া হয় না। পাশাপাশি নদিয়া জেলার কালীগঞ্জ থানার বৈরামপুর গ্রামে শিবমন্দিরে উঠতে দেওয়া হয় না বা গাজনে অংশ নিতে দেওয়া হয় না বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়। তারই ভিত্তিতে সম্প্রতি দফায় দফায় বৈঠকে বসে কেতুগ্রাম ২ ব্লক প্রশাসন।

তবে ইতিমধ্যে গঙ্গাটিকুরি গ্রামের শিবমন্দিরে ওই গ্রামের দলিতরাও পুজো দেবেন বলে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিন বিশ্বেশ্বর শিবমন্দির নিয়ে বৈঠক হয়। জানা গিয়েছে, বিশ্লেশ্বর শিবমন্দির প্রায় ১২০০ বছরের প্রাচীন। এখানে গাজন উৎসব ধুমধাম সহকারে হয়। মন্দির কমিটির সম্পাদক অমলেন্দু দেয়াসীন বলেন, “আলোচনার পর ঠিক হয়েছে গ্রামের সবাই শিবমন্দিরে পুজো দিতে পারবেন। গাজনের ভক্ত হতে পারবেন। পুজো নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
News Hub