শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: করোনা (Coronavirus) রোগীর দেহ দাহ করতে খরচ ১১৫০ টাকা! এমনই এক বিজ্ঞপ্তি জারি করল ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি শ্মশান কর্তৃপক্ষ। আর যা নিয়ে তীব্র অসন্তুষ্ট মৃতের পরিবারের লোকজন। বিরোধিতায় সরব রাজনৈতিক নেতৃত্বরাও।
রাজ্যের করোনা গ্রাফ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী। হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রশাসনিক মহল। উত্তরবঙ্গের করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা নেহাত কম নয়। মৃত্যুও হচ্ছে অনেকেরই। দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ির কোভিড হাসপাতালে নিহতদের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি শ্মশানে দাহ করা হচ্ছে। সম্প্রতি ওই শ্মশানে একটি বিজ্ঞপ্তি দেখে চোখ কপালে ওঠে মৃতের পরিজনদের। ওই বিজ্ঞপ্তিতে লেখা, করোনা সন্দেহে কিংবা করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাহ করতে মোট ১১৫০টাকা দিতে হবে। যেহেতু করোনা রোগীদের দাহ পরিজনেরা করতে পারেন না তাই ওই টাকা সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই সংগ্রহ করবে।
এই বিজ্ঞপ্তি দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নিহতের পরিজনেরা। তাঁদের দাবি, মূলত দার্জিলিংয়ের মানুষজন চা বাগান এবং পর্যটন শিল্পের মাধ্যমেই আয় করেন। লকডাউনের ফল বেশ কয়েকদিন চা বাগানে কোনও কাজ হয়নি। পর্যটন শিল্পও মুখ থুবড়ে পড়েছে। তার ফলে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আয় অনেকেরই প্রায় তলানিতে ঢেকেছে। এই পরিস্থিতিতে দেহ দাহ করার জন্য অনেকের পক্ষেই ১১৫০ টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যও (Ashok Bhattacharya) শ্মশান কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধী। টাকা দিতে না পারলে কী তবে দেহ দাহ করা হবে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক পুন্নম বলম এস যদিও শ্মশান কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি জানেন। তিনি বলেন, “আগেও এই নিয়ম ছিল। তবে করোনা পরিস্থিতিতে কিছুদিন দাহ করার ক্ষেত্রে টাকা নেওয়া বন্ধ ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে শ্মশান সংস্কারের খরচও তোলা সম্ভব হবে না। তাই আবারও ১১৫০ টাকা করে নেওয়া শুরু হয়েছে।” তবে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্যের দাবি এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.