সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: বাংলাদেশ, মায়ানমার, ওড়িশা না বাংলা?
কার উপর আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়ের খাঁড়া? সোমবার রাত পর্যন্ত পরিষ্কার করে জানাতে পারেনি হাওয়া অফিস৷ বাংলাদেশের দিকে পাল্লা ভারী হলেও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে চার জায়গাতেই৷
সবাই এর-ওর মুখের দিকে তাকাচ্ছে৷ রক্তচাপ বাড়িয়ে নিম্নচাপটি পরিণত হয়েছে গভীর নিম্নচাপে৷ আজ, মঙ্গলবার শক্তি বাড়িয়ে তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা৷ তার পরই শুরু হবে আছড়ে পড়ার কাউন্টডাউন৷ সোমবার সন্ধ্যায় আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশ দাস জানিয়েছেন, নিম্নচাপটি এখন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে৷ যা প্রবণতা তাতে ঘূর্ণিঝড় হয়ে ওড়িশায় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি৷
অন্যদিকে, দিল্লি থেকে সাইক্লোন ওয়ার্নিং সেন্টার বা ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত সতর্কতা কেন্দ্রের প্রধান মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরের শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্তটি চট্টগ্রাম ও মায়ানমার উপকূলের দিকে সরে যাচ্ছে৷ একই কথা বলছেন ওড়িশার আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা শরৎচন্দ্র সাহু৷ তিনি জানান, ওড়িশার গোপালপুর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ঘনীভূত হয়েছে নিম্নচাপটি৷ যা আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্তের আকার নিতে চলেছে৷ তবে ওড়িশাবাসীর অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই৷ কারণ, ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম৷ এটি ক্রমশ বঙ্গোপসাগরের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে বাংলাদেশের দিকে সরে যাচ্ছে৷
প্রস্তুতি অবশ্য নিয়ে রাখছে ওড়িশা প্রশাসন৷ ওড়িশার বিশেষ ত্রাণ কমিশনার পি কে মহাপাত্র জানিয়েছেন, মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে৷ পর্যটকরা যাতে ওই ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর তিন দিন জলে নামার চেষ্টা না করেন সেজন্য পুরী, গোপালপুর-অন-সি-সহ বেশ কিছু জায়গায় পুলিশ ও প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে৷ উপকূলবর্তী ১১টি জেলার প্রশাসনকে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ তৈরি থাকতে বলা হয়েছে দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলাকারী বাহিনীকেও৷ সম্ভাব্য সমস্যা মোকাবিলার জন্য মঙ্গলবার জেলাপ্রশাসনগুলির সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক৷
প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে নবান্নও৷ দুদিন আগেই আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে রাজ্যকে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সতর্ক করা হয়৷ বেজায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রাজ্যের চাষিরা৷ ধান পেকে এসেছে৷ সবজিও উঠতে শুরু করেছে৷ এই সময় ঘূর্ণিঝড় ছোবল দিলে অকালমৃত্যু হবে পাকা ফসল ও সবজির৷ মাঠে মারা যাবে দীপাবলির উৎসব৷ আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, নিম্নচাপের যা মতিগতি তাতে আগামী ২৮ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আছড়ে পড়বে৷ তবে, আবহাওয়া বুধবার থেকেই খারাপ হতে থাকবে৷ কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে শুরু হবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি৷ ফলে প্রমাদ গুনছেন পুজোকর্তারা৷ ২৯ অক্টোবর তো কালীপুজো৷ বুধ-বৃহস্পতি চলবে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি৷ ফলে টেনশনের পারদ চড়ছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.