রিংকি দাস ভট্টাচার্য: যেমনটি ভাবা হয়েছিল, তেমনটিই হল।
দফায় দফায় শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিল মধ্যপূর্ব বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপ। ‘তিতলি’ নামধারী সেই ঝড়ের প্রভাবে আজ, বুধবার থেকে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। উপকূল এলাকায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বওয়ার সম্ভাবনা। সেইমতো এদিন সকাল থেকেই মেঘলা শহরের আকাশ। ঠান্ডা হাওয়া বইছে।
দেবীপক্ষের সূচনায় ঘূর্ণিঝড়ের কথা চাউর হতে স্বভাবতই ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে বাঙালির মন। সকলের মনে একটাই প্রশ্ন, দুর্যোগ কবে কাটবে! হাওয়া অফিস খুব একটা সুখবর দিচ্ছে না। বরং তাদের ইঙ্গিত, প্রত্যক্ষভাবে না হোক, পরোক্ষে এই ঘূর্ণিঝড় বাগড়া দেবে পুজোর আকাশে। “ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বুধবার থেকে শুক্রবারের মধে্য গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলি অর্থাৎ কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। অতি ভারী বৃষ্টি না হলেও বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকছে মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরে”–মঙ্গলবার জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
অর্থাৎ, পরিস্থিতি যা, তাতে প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় এবার বাঙালির শারোদৎসবের প্রস্তুতি ভিজে চুপচুপে হওয়ার বিলক্ষণ আশঙ্কা। শুধু তা-ই নয়। পঞ্চমীর আগে তৃতীয়া-চতুর্থীতে দিনভর ঝকঝকে নীল আকাশ দেখার গ্যারান্টি নেই। ভিড় এড়াতে তৃতীয়া-চতুর্থীর রাতে নতুন জামাকাপড় পরে ঠাকুর দেখা আর হুল্লোড়ের পর্ব সেরে নেবেন, এমন পরিকল্পনাতেও কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে আলিপুর হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস। এদিন আবহাওয়াবিদরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, প্রতিপদ থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে দফায় দফায় বর্ষণের প্রভূত সম্ভাবনা। কখনও হালকা, কখনও মাঝারি। যা চলবে অন্তত চতুর্থী পর্যন্ত। যদিও পঞ্চমী থেকে আকাশ পরিষ্কার হতে পারে বলে মনে করছেন আলিপুরের কর্তারা।
[উত্তরপ্রদেশে লাইনচ্যুত নিউ ফরাক্কা এক্সপ্রেস, মৃত কমপক্ষে ৫]
নয়াদিল্লির মৌসম ভবন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারের মধ্যে তিতলি আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশার উত্তর-পশ্চিমাংশে গোপালপুর এবং উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গপত্তনমে। ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৭৫-১০০ কিলোমিটার। সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠায় ওড়িশা, অন্ধ্র ও পশ্চিমবঙ্গে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তিতলির প্রভাবে ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত এবং তার জেরে বানভাসির আশঙ্কা রয়েছে। বুধ থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ওড়িশা এবং অন্ধ্রে তিতলির দাপট সব থেকে বেশি থাকবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। মৌসম ভবনের অনুমান, তারপর ঘূর্ণিঝড় তিতলি উত্তর-পূর্বে ঘুরে গিয়ে ক্রমশ শক্তি হারাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.