নব্যেন্দু হাজরা: কালীপুজোর প্রাক্কালে সামান্য স্বস্তির খবর দিল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। জানিয়ে দেওয়া হল, উৎসবের মরশুমে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের বাংলায় আছড়ে পড়ার আশঙ্কা কার্যত নেই। তবে এর ফলে রাজ্যের একাধিক জেলায় ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, আগামী সোমবার থেকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া শুরু হবে। উপকূল এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। উপকূলের পাশাপাশি প্রভাব পড়তে পারে কলকাতাতেও (Kolkata)। এ শহরে ঝোড়ো হাওয়ার থেকে বৃষ্টির আশঙ্কাই বেশি। তবে আজ এবং আগামিকাল মূলত পরিষ্কার আকাশ থাকবে। বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। সকালে ও রাতের দিকে আবহাওয়া মনোরম থাকবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় শহরের তাপমাত্রা থাকবে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এবার প্রশ্ন হল ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং (Cyclone Sitrang)-এর বর্তমান অবস্থান কী? কোন পথেই বা এগোতে চলেছে ঘূর্ণিঝড়? আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আন্দামান সাগরের নিম্নচাপটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। আন্দামান সাগর ও পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে এটি আজ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপর পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিকের বদলে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। আগামিকাল এটি অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আবার দিক পরিবর্তন করে উত্তর দিক বরাবর এগোবে। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে সোমবার তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এরপর উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে ঘূর্ণিঝড়টি। মঙ্গলবার তা সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্মে পরিণত হয়ে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূল বরাবর সমুদ্রে অবস্থান করবে। এরপর বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকা দিয়ে একটি স্থলভাগে ঢুকতে পারে বলে অনুমান করছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সতর্ক প্রশাসন। সবদিক থেকে প্রস্তুত নবান্ন। এদিকে মাইকিং চলছে সুন্দরবনের একাধিক এলাকায়।
এর প্রভাবে মূলত ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল অংশে। বৃষ্টিতে ভিজবে পূর্ব মেদিনীপুরের কিছুটা অংশ। এই তিন জেলাতেই ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে মঙ্গলবার। সোমবার ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে ৬০ থেকে ৬৫ কিলোমিটার। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত মঙ্গলবার ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হওয়া বইতে পারে এই জেলাগুলির একাধিক এলাকায়। তবে হালকা ঝোড়ো হাওয়া শুরু হবে সোমবার থেকেই। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাতেও মেঘলা আকাশ ও হালকা বৃষ্টি হতে পারে বলে অনুমান আবহবিদদের।
কোনওরকম দুর্ঘটনা এড়াতে শনিবারের মধ্যে মৎস্যজীবীদের উপকূলে ফিরে আসতে এবং রবিবার থেকে সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পর্যটকদের নিয়ন্ত্রিতভাবে সমুদ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী সমস্ত বিনোদনমূলক খেলা ও কাজকর্ম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবন এলাকায় সমস্ত ফেরি সার্ভিস সোম ও মঙ্গলবার বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে হাওয়া অফিস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.