নিরুফা খাতুন: ক্রমশ ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। এই মুহূর্তে তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে রবিবার গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি বর্তমানে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থার করছে। ক্যানিং থেকে ৫৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্ব এবং সাগরদ্বীপ থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে নিম্নচাপটি। গভীর নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে উত্তর দিকে সরবে বলেই খবর। শনিবার সন্ধ্যায় তৈরি হবে ঘূর্ণিঝড়। রবিবার গভীর রাতে বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি অংশে আছড়ে পড়বে। সেই সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতি থাকবে ঘণ্টায় ১১০-১২০ কিলোমিটার। হাওয়া বইতে পারে ১৩৫ কিলোমিটার বেগে।
রবিবার মূলত উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রচুর বৃষ্টি হবে। সেইসঙ্গে ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, কলকাতায়। এই জেলাগুলিতে জারি লাল সতর্কতা। ওইদিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুরে। এই দুই জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি। ২৭ তারিখ বাংলার কোনও জেলায় লাল সতর্কতা নেই। তবে দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুরে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। আর ভারী বৃষ্টি হতে পারে দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, বীরভূম, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুরে। বাকি জেলাগুলিতে হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপর নবান্ন।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ নিয়ে শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত বিভাগীয় আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক শেষে শিয়ালদহের ডিআরএম দীপক নিগম জানান, যুদ্ধকালিন প্রস্তুতি নিয়ে মোকাবিলায় রেল। শনিবার সকালেই শিয়ালদহের বিভাগীয় সব অফিসার সম্ভাব্য জায়গাগুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে কাজ শুরু করেছে। বালিগঞ্জ, হাসনাবাদ, হাবড়া স্টেশন থেকে হোর্ডিংয়ের ভিনাইল নির্মিত সিট খুলে ফেলে হয়েছে। আরও অনেক স্টেশনে এভাবে খুলে ফেলা হবে। পাশাপাশি লাইন ও স্টেশনের আশপাশে লাগানো সব ধরণের প্ল্যাস্টিক খুলে ফেলা হচ্ছে। কারণ এগুলি থেকে সবচেয়ে বেশি বিপদের আশঙ্কা থাকে। ঝড়ে উড়ে গিয়ে ওভারহেড তারে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। কাকদ্বীপ স্টেশনটি পুরোপুরি পরিষ্কার করে বিপদমুক্ত করে রাখা হয়েছে। ডিআরএম নিগম জানান, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মধ্যেও যাতে ট্রেন চলানো যায়, সেজন্য শিয়ালদহ, দমদম, বারাসত, নৈহাটি, রানাঘাটে চালক সহ ডিজেল ইঞ্জিন রাখা থাকবে রবিবার সকাল থেকেই। শনিবার থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত শিয়ালদহ ডিভিশনের সব কর্মীকে অফিসে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি বিপর্যয় স্থল হিসাবে চিহ্নিত নামখানা, ডায়মন্ডহারবার ও হাসনাবাদ স্টেশনে ইঞ্জিনিয়ারিং, সিগন্যাল, টেলিকম কর্মীরা সব সময় উপস্থিত থেকে ট্রেন পরিচালনায় সহযোগিতা করবেন। বেশ কিছু ট্রেন এখনো পর্যন্ত বাতিল হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.