সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: স্বস্তির নি:শ্বাস ফেললেন সুন্দরবনবাসী। ‘ফণী’ তেমনভাবে কোনও প্রভাবই ফেলতে পারেনি সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমা, বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানা, সাগরদ্বীপ এলাকায়। ঝড় সুন্দরবন এলাকার দ্বীপগুলিতে রাতে আছড়ে পড়লেও সাধারণ মানুষের জীবনে তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আর তাই সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের কপালে যে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল, শনিবার ভোর হতেই তা মিলিয়ে যায়।
[ আরও পড়ুন: ফণীর ছোবলে দেরিতে আসবে বর্ষা, শুখা মরশুমের আশঙ্কা হাওয়া অফিসের ]
সূত্রের খবর, বকখালি, নামখানায় কিছুটা সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ বকখালিতে কয়েকটি দোকানের চাল উড়ে গিয়েছে৷ নামখানা স্টেশনের শেডের একাংশ উড়ে গিয়েছে৷ এদিন সকালে উপকূল এলাকায় ঝোড়ো হাওয়ার কিছুটা দাপট থাকলেও রোদের দেখা মিলেছে। পাথরপ্রতিমা, সাগর, বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, কাকদ্বীপ, নামখানা ও ডায়মন্ড হারবারে ত্রাণশিবিরগুলিতে আশ্রয় নেওয়া নদীর ধারে বসবাসকারী মানুষ শনিবার রোদের দেখা পেয়েই যে যার বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।আবহাওয়া দপ্তরের মুহুর্মুহু সতর্কবার্তায় সিঁদুরে মেঘ দেখেছিলেন সুন্দরবনের মানুষ। বিশেষ করে নদী ও সমুদ্রের কাছাকাছি থাকা মানুষজন ‘ফণী’র ভয়াল রূপ কল্পনা করে আতঙ্কে প্রহর গুণেছিলেন। কারণ দশবছর আগের আয়লা সুন্দরবনবাসীর জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। যা আজও তাঁদের মনে দগদগে ঘায়ের মত।
[ আরও পড়ুন: এবার বেসরকারি হাসপাতালেও রক্ত সংগ্রহে চালু ক্রেডিট কার্ড, পথ দেখাল রাজ্যের এই শহর ]
‘ফণী’ শুক্রবার মাঝরাতে সুন্দরবনে আছড়ে পড়লেও তার প্রভাব ততটা ছিল না। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। তবে ঢোলাহাট থানার নীলেরহাট এলাকার সর্দারপাড়ায় ঝড়ে দেওয়াল চাপা পড়ে এক দম্পতি আহত হয়েছেন। লক্ষ্মী সর্দার ও সন্দীপ সর্দার নামে ওই দম্পতি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। রাত দু’টোর সময় ঝড়ে ইঁটের দেওয়াল চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন তাঁরা। আহত ওই দম্পতিকে প্রথমে স্থানীয় গদামথুরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
[ আরও পড়ুন: কাটল ফাঁড়া, বিশেষ দাপট ছাড়াই বাংলা ছাড়ল ফণী ]
পাথরপ্রতিমার লক্ষ্ণীপুরে নদীর ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের জল গ্রামে ঢুকলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তা আবার বেরিয়েও যায়। এছাড়া তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি কোথাও হয়নি বলেই জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর কুমার জানা জানান, তাঁর এলাকায় যে কয়েকটি জায়গায় অস্থায়ী নদীবাঁধে ফাটল ধরেছিল সেগুলি নিয়ে প্রবল আশঙ্কা তো ছিলই কিন্তু শেষ পর্যন্ত ‘ফণী’র তান্ডব ওই এলাকাগুলিতে তেমনভাবে থাবা বসাতে পারেনি। নদীবাঁধগুলির আশপাশ এলাকা থেকে যাঁদের রাতারাতি সরিয়ে এনে আশ্রয় শিবিরে রাখা হয়েছিল৷ তাঁরা সকলেই শনিবার সকালে সূর্যের মুখ দেখতে পেয়েই যে যার বাড়িতে চলে গিয়েছেন বলে জানান তিনি। সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরাও জানিয়েছেন, তাঁর এলাকাতেও কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। তবে মুড়িগঙ্গা নদীতে ভেসেল চলাচল বন্ধ রাখার কারণে যে সমস্ত পর্যটক গঙ্গাসাগরে আটকে রয়েছেন তাঁদের এদিন বাড়ি ফেরার বন্দোবস্ত করতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.