রিন্টু ব্রহ্ম, বর্ধমান: কাটমানি কাণ্ডের আঁচ এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। তা ফেরতের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পোস্টার পড়ল। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতার নামে সাদা কাগজে লাল কালিতে পোস্টারগুলি সাঁটা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের গেটে ও ভিতরে। একটি ছাত্রাবাসের গেটের পাশেও পড়েছে একই ধরণের পোস্টার। কোথাও লেখা হয়েছে ‘টিএমসিপি কাটমানি ফেরত দাও’। কোনওটিতে আবার লেখা রয়েছে ‘রামিজ কাটমানি ফেরত দাও’। বৃহস্পতিবার সকালে পোস্টারগুলি নজরে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে। যদিও বেলার দিকে পোস্টারগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
টিএমসিপির দাবি, অপবাদ দিতে বিরোধীরাই এই কাজ করেছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে উপাচার্যর কাছে পোস্টার সাঁটানোর ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিটের সভানেত্রী জুলফা খাতুন বৃহস্পতিবার উপাচার্যকে লিখিতভাবে চিঠি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি ছাড়া অন্য কোনও সংগঠনের ইউনিটই নেই। যারা কাটমানি ফেরতের নামে টিএমসিপির বিরুদ্ধে পোস্টার দিয়েছে তাদের তা প্রমাণ করতে হবে। না হলে উপাচার্য যেন ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেন, সেই দাবিও জানিয়েছে টিএমসিপি।
রামিজ ওরফে আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে এই পোস্টার পড়েছে। কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। তিনি একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে রিসার্চ স্কলার। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি পরিচালনার রাশ এখনও তাঁর হাতেই রয়েছে। রামিজের দাবি, ‘কাটমানি নিয়েছে,অভিযোগ তুলে পোস্টার দেওয়া যেতেই পারে। যা খুশি বললেই কিছু প্রমাণ হয় না। নির্দিষ্ট কিছু প্রমাণ থাকলে তারা অভিযোগ জানাক। মুখ্যমন্ত্রী যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন, সেখানে অভিযোগ করুক। তা না করে কারও সামাজিক সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে এভাবে৷’ তিনি আরও বলেন, রাজনীতি করতে গেলে অনেক রাজনৈতিক শত্রু থাকে। অনেকের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি হচ্ছে না। এই জন্যই এমন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর৷
এসএফআইয়ের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরী বলেন, “তৃণমূল ছাত্র নেতারা কলেজে-কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটমানি নিয়েছে তা সকলেই জানেন। এখন সাধারণ ছাত্রছাত্রীরাই সেই পোস্টার দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁরা টাকা ফেরত চাইছেন।”
অন্যদিকে, অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের তরফেও ছাত্রদের কাছ থেকে নেওয়া কাটমানি ফেরতের দাবি তোলা হয়েছে। সংগঠনের জেলা সভাপতি অনিরুদ্ধ বিশ্বাসের কথায়, “সবাই এখন কাটমানি ফেরত চাইছে। তাই ছাত্রছাত্রীরাও এগিয়ে এসেছে। যদি সত্যিই কাটমানি নেওয়া হয়, তাহলে তা ফেরত দিতেই হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.