ধীমান রায় ও বিপ্লব চন্দ্র দত্ত: কাটমানি ফেরত চেয়ে ফের পোস্টার পড়ল কাটোয়া শহরে। কাটোয়া পুরসভার তৃণমূলের দুই কাউন্সিলর ও পুরসভার তিন অস্থায়ী কর্মীর নামে পোস্টার পড়েছে। দাবি করা হয়েছে ৭ দিনের মধ্যে কাটমানি ফেরত দিতে হবে। যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকেই এই দাবি করা হয়েছে বলে পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের নাম করে আসলে বিজেপিই রাতের অন্ধকারে এইসব পোস্টার লাগিয়েছে। এদিকে কাটমানি নিয়ে পোস্টার পড়েছে নদিয়ার রানাঘাটেও। নিশানায় খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সভাপতি শংকর সিং। পোস্টারে রীতিমতো ছবি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, “এস বি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কোটি কোটি টাকার ঠিকাদারির কাটমানির জোরেই কি রানাঘাট জেলা সভাপতি হয়েছেন শংকর সিংহ?” ওই পোস্টারের নিচে লেখা রয়েছে, ‘সৌজন্যে: প্রকৃত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীবৃন্দ’।
মঙ্গলবার সকালে কাটোয়া পুরসভার ১০ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বেশকিছু পোস্টার দেখতে পান স্থানীয়রা। কয়েকটি পোস্টার দেওয়ালে লাগানো ছিল, আর কয়েকটি পড়েছিল রাস্তায়। পোস্টারগুলিতে লেখা ছিল, “সরকারি ঘরের টাকা কাটমানি নিয়েছে ১০ ও ১১ নম্বর কাউন্সিলর। সাথে আছে দেবু, ঝন্টু ও বুদ্ধ মণ্ডল। জনগণের টাকা ৭ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। সমাজবিরোধীরা লক্ষ লক্ষ টাকা কাটমানি দিয়ে পুকুর ভরাট করছে। রবি চট্টোপাধ্যায় নীরব। যুব তৃণমূল।”
জানা গিয়েছে কাটোয়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চিনুরানি মণ্ডল ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলেন অভিরাম হালদার। তাঁদের সঙ্গে যে তিনজনের নাম পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে বুদ্ধদেব মণ্ডল ও দেবু কাটোয়া পুরসভার অস্থায়ী কর্মী। কাউন্সিলররা এনিয়ে যদিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা বিজেপির কাজ। ওরা এলাকায় অশান্তি পাকানোর জন্য রাতের অন্ধকারে এই ধরনের পোস্টার সাঁটিয়ে দিচ্ছে। কাটমানি নিয়ে যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে, তাহলে তাঁরা অবশ্যই প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন।”
[ আরও পড়ুন: তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুরকে ঘিরে উত্তপ্ত বাঁকুড়ার তালডাংরা, কাঠগড়ায় বিজেপি ]
এদিকে সোমবার সকালে রানাঘাট থানার রামনগর, আইশতলা, গড়ের বাগান এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও বিধায়ক শঙ্কর সিংহের নামে পোস্টার নজরে পড়ে স্থানীয়দের। ওই পোস্টারে প্রকৃত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীবৃন্দ নাম দিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তোলা হয়েছে, একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে কোটি কোটি টাকার ঠিকাদারির কাটমানির জোরেই কি শাসকদলের পদ পেয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই বিধায়ক। শংকর সিংহের বক্তব্য, “আমার রাজনৈতিক জীবন পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আমি কখনও কাটমানি দিয়ে বা নিয়ে রাজনীতি করেছি, এ কথা আমার নিন্দুকেরাও বিশ্বাস করবেন না। যারা এই পোস্টার মেরেছে, তারা নিজেদের পরিচয় কেন গোপন রেখেছেন, আমি জানি না। কেউ যদি আত্মগোপন করে কারও নামে অভিযোগ আনেন , তাহলে তা নিয়ে কী বলব? আসলে এটা সম্পূর্ণ রুচিহীনতার পরিচয়। কিছু হতাশাগ্রস্ত মানুষ এসব করেছেন। যদি কারওর নামে অভিযোগ করার সাহস তাদের থাকে, তাহলে আমি বলব, সামনে এসে অভিযোগ করতে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও অভিযোগ করতে পারেন।”
[ আরও পড়ুন: বীরভূমে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে ট্রেনে তাণ্ডব দুষ্কৃতীদের, বেধড়ক মার যাত্রীদের ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.