Advertisement
Advertisement
Memari

গ্রেপ্তারের কথা জানতেই পারলেন না ক্রেতারা! গাঁজা কিনতে মেমারির মহিলার বাড়ির সামনে ভিড়

বুধবার মেমারির মহিলা গাঁজা কারবারি গ্রেপ্তার হয়।

Customers unaware of arrest, assembled at marijuana shop in Memari
Published by: Sayani Sen
  • Posted:December 19, 2024 9:23 pm
  • Updated:December 19, 2024 9:23 pm  

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মেমারির কৃষ্টিহলের পিছন দিকের বাড়ি সিল করা। সকালে মুঠোভর্তি টাকা নিয়ে বাড়ির চারিপাশে ইতিউতি ঘুরছিল একজন। পাশ থেকে কেউ একজন জিজ্ঞেস করল গাঁজা কিনতে এসেছো। হ্যাঁ বলতেই দেখে ক্যামেরা চলছে। পড়িমরি করে দে দৌড় গাঁজাখোরের। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশ‌ কয়েকবার এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছে। বুধবার ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সঙ্গীতা সাহানিকে ৪৭ কেজি গাঁজা ও প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা-সহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু সেই খবর গাঁজা সেবকদের অনেকের কাছেই ছিল না। প্রতিদিনকার মতো এদিনও সকাল হতেই পুরিয়া কিনতে হাজির হয়েছিল। কিন্তু তাদের কল্পনাতেই ছিল না এইভাবে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে পড়তে হবে। ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে দৌড়ে পালাতে থাকে তারা।

মেমারি পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চকদিঘি মোড়ের কৃষ্টি হলের পিছন দিকে লালপরি সাহানির বাড়ি। যেখানে জানালায় টোকা দিলে পুরিয়া বাড়িয়ে দেওয়া হত। তার আগে অবশ্যই পুরিয়ার দাম বুঝে লালপরির মেয়ে সঙ্গীতা। ৫০ ও ১০০ টাকার পুরিয়া মিলতো। আবার এক কেজি প্যাকেটের পাইকারি কারবারও করতো সঙ্গীতা। শুধু মেমারি নয় পূর্ব বর্ধমান ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার বহু জায়গা থেকেই খরিদ্দার আসত সঙ্গীতার বাড়িতে। খুচরো ও পাইকারি দুইরকম বিক্রেতা ছিল তার। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা গাঁজা বিক্রি করেই সঙ্গীতা পেয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এদিন ধৃত সঙ্গীতাকে বর্ধমান আদালতে তোলে পুলিশ। ধৃতকে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গাঁজার কারবার আগে লালপরি আর তার ছেলে চালাত। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারও করেছিল। পরে জামিনে ছাড়া পায় তারা। ছাড়া পাওয়ার পরদিনই লালপরির ছেলে পথ দুর্ঘটনায় মারা যায়। মাঝে কারবার কিছুদিন বন্ধ ছিল। তারপর লালপরির মেজো মেয়ে সঙ্গীতা কারবারের‌ হাল ধরে বলে তদন্তকারীরা জানতে পারেন। বুধবার অভিযানের সময় নানাভাবে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। কখনও বলে জামালপুরের থানার মশাগ্রাম থেকে মায়ের বাড়ি ঘুরতে এসেছে। গাঁজার ব্যাপারে সে না কি কিছুই জানে না। অভিযানের সময় অবশ্য তার মা ছিল না। টাকা উদ্ধারের পর পুলিশকে বলে তার ভাই পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল। তারই ক্ষতিপূরণের টাকা। কিন্তু সেই সংক্রান্ত কোনও নথি দেখাতে পারেনি।

পুলিশের দাবি, গাঁজার কারবারের বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পেয়েই অভিযান চালানো হয়েছিল। এদিন পুলিশ মশাগ্রামে সঙ্গীতার শ্বশুরবাড়িতেও হানা দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে কাউকে পায়নি। সবাই পালিয়েছে। সঙ্গীতার এক বোন থাকে পাটনায়। আর এক বোন মেমারিতেই থাকে। কৃষ্টি হলের উল্টোদিকের রাস্তায় চায়ের দোকান চালায় তার স্বামী। সঙ্গীতাকে গ্রেপ্তারের পর তার দুই নাবালক সন্তানকে সেই বোনের হেফাজতেই রেখেছে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জানার চেষ্টা করা হবে আরও কোথাও গাঁজা মজুত আছে কি না। কোথা থেকে গাঁজা আনত, এই চক্রে আর কারা যুক্ত সবই জানার চেষ্টা করা‌ হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement