ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: আদিবাসীদের দূর্গোৎসব বলে পরিচিত শান্তিনিকেতনের সোনাঝুড়ির হীরালিনী দুর্গাপুজো। স্থানীয় আদিবাসীরা প্রতিমা তৈরি থেকে রং, পুজো সবতেই হাত লাগান। চলে চার দিন ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কিন্তু করোনার জন্য এবার ছন্দপতন। পুজো হলেও সব ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ। তাই মনখারাপ আদিবাসীদের।
শান্তিনিকেতন (Shantiniketan) সোনাঝুড়ি জঙ্গল সংলগ্ন বনেরপুকার ডাঙার হীরালিনী দূর্গোৎসব। ২০০১ সালে শিল্পী বাঁধন দাস এবং তার ছাত্র আশিস ঘোষ স্থানীয় আদিবাসীদের নিয়ে বেলবরণ পরবের মেলবন্ধনে এই দূর্গোৎসবে সূচনা করেন। শিল্পীসত্তা এবং আদিবাসী সমাজের মেলবন্ধনে প্রথম বছর হয় টেরাকোটার মূর্তি। দ্বিতীয় বছর কাঠ দিয়ে তৈরি করেছিলেন প্রতিমা। ২০০২ সালে মৃত্যু হয় বাঁধন দাসের। থেমে থাকেনি দূর্গোৎসব। আশিস ঘোষ স্থানীয় আদিবাসীদের নিয়ে করে চলেছেন সেই দুর্গাপুজো। টেরাকোটা, কাঠের দুর্গামূর্তির পাশাপাশি বাঁশ, ফাইবার কাস্টিং এবং লোহার তৈরি মূর্তি পূজিত হয় এখানে। প্রতি বছর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এই দেবী মূর্তি পূজিত হয়।
পুজোর (Durga Puja 2020) জন্য সারাবছর অপেক্ষা করে থাকেন স্থানীয় গ্রামের আদিবসীরা। এই দূর্গোৎসব ঘিরে সোনাঝুড়ি জঙ্গলে বসে মেলা। পুরুলিয়া ,বাঁকুড়া, বর্ধমান এমনকি ঝাড়খন্ড থেকে আদিবসী শিল্পীরা যোগ দেন। পরিবেশন করেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এবছর করোনা আবহে সব ধরনের সাংস্কৃতিক বাতিল করা হয়েছে। আশিস ঘোষ বলেন, “এই পুজোকে ঘিরে যে আদিবাসী অনুষ্ঠান, বাউল-সহ যেসব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত তা আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। প্রচুর মানুষ এই অনুষ্ঠান দেখতে এখানে আসেন। যাতে কোন সমস্যা তৈরি না হয় তার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” পুজোর পাশাপাশি আদিবাসী নাচ আর গানে অন্যরকম ভাললাগা তৈরি হয়। তবে এবার অনুষ্ঠানে ছেদ পড়ায় মনমরা সকলেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.