ছবি: প্রতীকী
অর্ণব দাস, বারাসত: অসুস্থতা নিয়েই কাজে এসেছিলেন প্রৌঢ়া। শারীরিক দুর্বলতায় মাথা ঘুরে পরে গিয়ে ঘটে যায় মারাত্মক দুর্ঘটনা। ৮ ইঞ্চির লোহার রড ঢুকে যায় শুক্লা চট্টোপাধ্যায়ের মাথায়। এমন অবস্থায় রোগীকে রেফার করার ঝুঁকি নেয়নি বারাসত হাসপাতাল (Barasat Hospital)। অস্ত্রোপচার করে ফেলেন চিকিৎসকরা। সোমবার সফল অস্ত্রোপচারের পর মঙ্গলবার দিব্যি সুস্থ হয়ে যান শুক্লাদেবী। জীবন ফিরে পাওয়ায় তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন বারাসত হাসপাতালের চিকিৎসকদের।
পরিবার এবং হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিনই শেওড়াফুলি থেকে বারাসতে পরিচারিকার কাজ করতে আসেন বছর পঞ্চাশের শুক্লাদেবী। অন্যান্য দিনের মতো সোমবারও তিনি বারাসতে কাজে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর শরীর দুর্বল ছিল। হঠাৎই বারাসত দক্ষিণপাড়া সংলগ্ন যশোররোডের ধারে একটি নামী সোনার দোকানের সামনে তিনি মাথা ঘুরে পরে যান। সেখানেই একটি লোহার রেলিং ছিল। সেই রেলিংয়ের ৮ ইঞ্চি লোহার রড তাঁর মাথার পিছনের দিকে বিপজ্জনক ভাবে গেঁথে যায়।
রক্তাক্ত অবস্থায় শুক্লাদেবীর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। খবর দেওয়া হয় বারাসত থানায় এবং দমকল। তারপর গ্যাস কাটার দিয়ে বাইরের দিকের লোহার রডটা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু শুক্লার মাথার ভিতরে তখনও ৮ ইঞ্চির লোহার রডের একটা অংশ গেঁথে ছিল। এমন অবস্থায় তাঁকে তড়িঘড়ি বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। লোহার রড গেঁথে শারীরিক অবস্থা এতটাই আশঙ্কাজনক ছিল যে শুক্লাদেবীকে রেফার করলে মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিল। শেষমেশ ঝুঁকি নিয়েই অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেয় চিকিৎসকরা।
প্রায় এক ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে রোগীর মাথায় গেঁথে থাকা ৮ ইঞ্চির লোহার রডটা বের করা হয়। এই প্রসঙ্গে বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, “রেফার করলে রাস্তাতেই রোগীর মৃত্যু হওয়ার প্রবল সম্ভবনা ছিল। তাই রোগীর জীবন রক্ষা করতে আমাদের ঝুঁকি নিতে হয়েছিল।”
সফল অস্ত্রোপচারের পর অনেকটাই সুস্থ আছেন শুক্লাদেবী। তিনি জানিয়েছেন, “শেওড়াফুলি থেকে বারাসতে কাজে এসেছিলাম। বিকেলে কাজের বাড়ির বাচ্চাটাকে আনতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু মাথা ঘুরে রাস্তার ধারের রেলিংয়ের উপর পড়ে গিয়ে লোহার রড মাথায় ঢুকে যায়। বারাসত হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন্যই প্রাণে বেঁচে গিয়েছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.