Advertisement
Advertisement
Nolen Gur

শীতের খামখেয়ালিপনায় বঙ্গে নলেন গুড়ে টান, ভেজালের রমরমা বাজারে

চিনি মেশানো ভেজাল গুড়ে বাজারে ছেয়ে গিয়েছে।

Crisis of Nolen Gur as winter has not set in Bengal | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:December 11, 2021 7:53 pm
  • Updated:January 20, 2022 6:46 pm  

বিপ্লব চন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: শীত আর নলেন গুড় (Nolen Gur) কার্যত সমার্থক। কিন্তু, এ বছর যেন বিধি বাম। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে যেতে চললেও দেখা নেই ক্ষণিকের অতিথির। এদিকে, নভেম্বরের শেষ আসতে না আসতেই রসনাপ্রিয় বাঙালির মনে ইতিউতি উঁকি মারে নলেন গুড়ের সন্দেশ, রসগোল্লার স্মৃতি। এবার এখনও জাঁকিয়ে শীত না পড়ায় চাহিদা থাকলেও বাজারে সেভাবে মিলছে না নলেনগুড়ের সন্দেশ এবং রসগোল্লা। তার কারণ, শীত ভালভাবে না পড়ায় ঠিকমতো খেজুরের রস হচ্ছে না। রসের আকাল থাকায় গুড়ের চাহিদা থাকলেও রস ব্যবসায়ীরা সেইমতো জোগান দিতে পারছেন না। ফলে, অধরাই থাকছে মধুর এই মাধুরী।

 

Advertisement

এরই মধ্যে ঝোপ বুঝে কোপ মেরে চলছে ভেজাল গুড়ের কারবার। আসল গুড় বাজারে আসতে দেরি করায় চিনি মেশানো ভেজাল গুড় দখল করেছে বাজার। রস ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, “এমনিতেই খেজুরগাছের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। তার উপর এখনও পর্যন্ত শীত ভালভাবে না পড়ায় খেজুর রসের চাহিদা থাকলেও জোগান নেই। চিনি মেশানো কম দামের ভেজাল গুড়ে আসল নলেন গুড়ের সেই স্বাদ মেলে না।” একই সুর মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের গলাতেও। তাঁরা বলছেন, “মূলত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেই চাহিদা অনুযায়ী মিলছে না খেজুর রস। মেঘলা আবহাওয়া কেটে গিয়ে জাঁকিয়ে শীত পড়লে খেজুর রসের আমদানি হবে।”

 

[আরও পড়ুন: কিংবদন্তি কার্টুনিস্ট নারায়ণ দেবনাথের বাড়িতে সস্ত্রীক রাজ্যপাল, চিকিৎসার খরচ বহনের আশ্বাস]

মূলত নদিয়া জেলার মাজদিয়া, কুলগাছি-সহ গ্রামাঞ্চল থেকেই খেজুর রস জেলার বিভিন্ন জায়গায় জোগান দিয়ে থাকেন রস ব্যবসায়ীরা। তা থেকে নলেন গুড় তৈরি হয়ে পৌঁছে যায় কৃষ্ণনগর, রানাঘাট-সহ বিভিন্ন বাজারে। এছাড়া কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের মাজদিয়াতে বসে গুড়ের হাট। মূলত অগ্রহায়ণ মাস অর্থাৎ নভেম্বর মাসের শেষের দিকে নলেন গুড়ের আমদানি হলেও এবার তার কিছুই হয়নি।

তবে, এই চিত্র খুব যে নতুন, তা নয়। গত কয়েকবছর ধরেই চাহিদা থাকলেও ভাল নলেন গুড় মেলা দুষ্কর। কারণ হিসাবে গুড় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, “গ্রামের দিকেও খেজুর গাছের সংখ্যা কমে গিয়েছে। তাছাড়া, ভোরবেলা গাছ থেকে যারা রস সংগ্রহ করেন, সেই সব ‘শিউলি’-দের সংখ্যাও কিছুটা কমেছে। খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করতে যতটা পরিশ্রম এবং খরচ হয়ে থাকে, সেই পরিমাণ আয় হয় না তাঁদের। ফলে, অনেকেই পেশা বদলের দিকে ঝুঁকছেন।”

 

সাধারণত, প্রায় তিন হাঁড়ি খেজুর রস থেকে এক হাঁড়ি গুড় তৈরি হয়। তার জ্বালানি খরচও অনেক। জ্বালানি খরচ দিয়ে ভাল গুড়ের দাম কেজিপ্রতি প্রায় ৩০০ টাকা। অথচ চিনি মেশানো ভেজাল গুড় কেজি প্রতি ১০০ টাকা মূল্যেও পাওয়া যায়। চিনি মেশানো ভেজাল গুড় তৈরি করতে জ্বালানি খরচও কম। ফলে বাজারে ছেয়ে গিয়েছে ভেজাল গুড়। সেই গুড় দিয়ে তৈরি সন্দেশ, রসগোল্লা বা অন্যান্য মিষ্টিতে স্বাদ-গন্ধও নামমাত্র। এই পরিস্থিতিতে প্রকৃতির দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন ব্যবসায়ী থেকে রসের জোগানদাররা। কবে, আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে হাঁড়কাপুনি ঠান্ডা পড়বে, আপাতত সেদিকেই চেয়ে তামাম ভোজনরসিক বাঙালি।

[আরও পড়ুন: রাজ্যে ফের ওমিক্রন আতঙ্ক, পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকের শরীরে করোনা]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement