সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামান্য একটা ফেসবুক পোস্ট থেকে অশান্তির আগুন ছড়াল বসিরহাটে। বাংলার অধিকাংশ মানুষ এ ঘটনায় বিস্মিতই হয়েছিলেন। কেননা বাংলার সংস্কৃতি তথা ঐতিহ্য বলছে, এতটা অসহিষ্ণু অন্তত ছিল না বাংলার মাটি। তাহলে আচমকা এমন কী হল যে, একটা সামান্য পোস্ট দাঙ্গার আগুন লাগিয়ে দিল?
[ পরনে ধুতি-পাঞ্জাবি, শহরের অভিজাত শপিং মলে ঢুকতে বাধা পরিচালককে ]
কারণ খুঁজতে গিয়ে অবশ্য কেঁচোর বদলে কেউটে উঠে আসছে। এবং তাতে বোঝা যাচ্ছে পোস্টে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার তত্ত্বটা স্রেফ একটা অছিলা মাত্র। আসল কারণ গরুপাচারের ঝাঁপ বন্ধ হওয়া। বেআইনি পাচারকারীদের উপর বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স কঠোর হতেই, ভিতর ভিতর ফুঁসছিলেন অনেকে। ফেসবুক পোস্ট সেখানে অনুঘটক মাত্র।
[ বিতর্কিত মন্তব্যের জের, এফআইআর দায়ের রূপার বিরুদ্ধে ]
বসিরহাট, টাকির মতো অঞ্চলে দীর্ঘদিন সক্রিয় এই পাচার চক্র। বেআইনি এ ব্যবসায় কোটি কোটি টাকার হাতছানি। তার শিকড় ছড়িয়েছে বহু দূর পর্যন্ত। কিন্তু আচমকাই সবকিছুতে ইতি। গরুপাচার বন্ধ করতে বিএসএফ কঠোর হওয়ার পর থেকেই এ ব্যবসা তাই ঘুঘু চরার শামিল হয়েছে। কোনও এক অছিলায় অশান্তি পাকানোর উপায় খুঁজছিলেন অনেকেই। ফেসবুক পোস্টটি সেই বারুদের স্তূপে অগ্নিসংযোগ করেছে মাত্র।
[ লালকেল্লা উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, পুলিশের জালে হোটেলকর্মী ]
এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান চালিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেউ কেউ জানিয়েছেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধারণা হয়েছিল সংখ্যাগুরু বা হিন্দুদের আপত্তিতে ব্যবসা বন্ধের মুখে। এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এ ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। সেই ক্ষোভে অনেকেই ফুঁসছিলেন। যার বহিঃপ্রকাশই এই দাঙ্গা। অন্যদিকে বিজেপি সূত্র থেকে সংবাদমাধ্যমটি জানতে পেরেছে, এই পাচারচক্রের সঙ্গে ওতপ্রোত জড়িত ছিলেন রাজ্যের শাসকদলের নেতারা। কিন্তু ব্যবসা বন্ধ হওয়ার মুখে তাঁদের মধ্যে ঝামেলা বাধে। অর্থাৎ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব লেগেই ছিল। সেই আগুনে ঘৃতাহুতি দেয় ফেসবুক পোস্টটি। বসিরহাটের বাসিন্দাদের একাংশও এই কথাকেই সমর্থন জানিয়েছেন।
ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা চরমে পৌঁছেছে ভেবে ভেঙে পড়েছিলেন অনেক বাঙালিই। কিন্তু সত্যিই কি অসহিষ্ণুতা? নেপথ্যের কারণ অন্তত সে ইঙ্গিত দিচ্ছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.