কিংশুক প্রামাণিক, কালিম্পং: প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা জিটিএ-কে রাজ্য দিয়েছে৷ কোন খাতে কত অর্থ, মুখ্যমন্ত্রী সেই তথ্য প্রকাশ করে দিয়েছেন৷ কিন্তু এত টাকা গেল কোথায়? উন্নয়নের কোনও ছাপ এই পাঁচ বছরে জিটিএ-র কাজে দেখা যায়নি৷ কী হল এই টাকা৷ হিসাব দিন বিমল গুরুং৷
এই দাবি সামনে রেখে এবার পাহাড়ে মোর্চাকে পাল্টা প্যাঁচে ফেলে দিল তৃণমূল৷ পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস শনিবার কালিম্পংয়ে গুরুংকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “হয় টাকার হিসাব দিন, নয়তো বিমল গুরুংয়ের বাড়ির সামনে মহিলারা ধরনায় বসে সব বন্ধ করে দেবেন৷ মানুষকে জল দেওয়ার ক্ষমতা নেই, চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই, ঘরে বসে বন্ধ ডাকছেন৷ এ সব আর চলবে না৷ কোনও বনধ পাহাড়ে হবে না৷ ২৮ তারিখ মানুষ রাস্তায় নেমে বনধ ভাঙবেন৷”
এই সভায় দাঁড়িয়ে গুরুংয়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন বিদ্রোহী জিটিএ চেয়ারম্যান প্রদীপ প্রধান৷ তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, ঠিক বলেছেন৷ প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা জিটিএ পেয়েছে৷ কিন্তু সে টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে তা একমাত্র বিমল গুরুংই জানেন৷” বস্তুত, ক্রমাগত চাপের মুখে পড়ে ফের পাহাড়ে বনধ ডেকে মনোবল ভেঙে যাওয়া কর্মীদের চাঙ্গা করতে চাইছে মোর্চা৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকালই বলেছিলেন পাহাড়ে বনধ হবে না৷ বনধ করে পাহাড়ে অর্থনীতিকে ধ্বংস করা যাবে না৷ ৪,৭০০ কোটি টাকার বেশি পেয়েছে জিটিএ৷ তাহলে বনধ কেন?” এদিন তার জের টেনেই গুরুংকে তুলোধোনা করেন পাহাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস৷ বুঝিয়ে দেন, পাহাড়ে নিজেদের জমি শক্ত করে ফেলেছে তৃণমূল৷ এবার মোর্চার অর্থ নয়ছয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাবে দল৷ অর্থাৎ শুধু প্রশাসনিক উন্নয়ন দিয়েই পাহাড়ের মানুষের মন জয় নয়, মোর্চার রাজনৈতিক মোকাবিলা এখন থেকে শুরু হল৷ অরূপ চ্যালেঞ্জ নেন, কোনও বন্ধ পাহাড়ে করতে দেবে না তৃণমূল৷
এদিকে পাহাড়েও দেখা যাচ্ছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার হিড়িক৷ গোটা রাজ্যে যেভাবে সিপিএম ও কংগ্রেসে ভাঙছে, শনিবার তেমনই ছবি কালিম্পংয়ে৷ স্বয়ং মোর্চা সুপ্রিমোর গুরুং সম্প্রদায়ের প্রায় দু’হাজার মানুষ এদিন মুখিয়া পামু গুরুংয়ের নেতৃত্বে তৃণমূলে যোগ দেন৷ এছাড়া মোর্চার ছাত্র সংগঠন বিদ্যার্থী পরিষদের প্রচুর ছাত্রছাত্রী মিছিল করে এসে যোগ দেন৷ স্বতন্ত্র পার্টির নেতা পাসাং তামাং যখন যোগ দিচ্ছেন তখন রীতিমতো ফুল ছুড়ে বাজি পুড়িয়ে উৎসব করেন তাঁর অনুগামীরা৷ যোগ দেন খস সম্প্রদায়ের বহু মানুষ৷ এমনকী, হিল মুসলিম সংগঠনও তৃণমূলে মিশে গেল এদিন৷ আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোহন শর্মা বলেন, পাহাড়ে খুব শ্রীঘ্রই প্রধান শক্তি হবে তৃণমূল৷ এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিনি শর্মা, রাজেন মুখিয়া প্রমুখ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.