সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: পঞ্চায়েত ভোট যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্দেশ্যে চিঠি দিল সিপিএম। তাদের অভিযোগ, বহিরাগতরা সশস্ত্র অবস্থায় জড়ো হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায়৷ পঞ্চায়েত ভোটের দিন এলাকাগুলিতে ব্যাপক সন্ত্রাসের আশঙ্কা করছে তারা। এই মর্মেই চিঠি দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশন, রাজ্যপাল ও আসানাসোল দুর্গাপুর পুলিশের কমিশনারকে৷
[ ছুটির আনন্দ বাড়িয়ে শহরে বৃষ্টি, ভিজল উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গও ]
সিপিএম অভিযোগ তুলেছে, ভোটের দিন সন্ত্রাস ছড়াতে শাসকদল শুধু বাইরের জেলা থেকেই নয়, পাশের জেলা থেকেও বহিরাগত নিয়ে এসেছে৷ বাইকবাহিনী শনিবার রাত থেকেই জড়ো হয়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়৷ যদিও সিপিএমের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার শেষ হতেই বহিরাগতরা পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঢুকতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছে সিপিএম৷ দলের তরফে এলাকা নির্দিষ্ট করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ দুর্গাপুর ফরিদপুর, কাঁকসা, অন্ডাল ও পান্ডবেশ্বর, জামুরিয়া ও সালানপুর ব্লকে সশস্ত্র অবস্থায় বাইকবাহিনী জড়ো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তারা৷ দলের তরফে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের ঠেকাতে জেলার বিভিন্ন ব্লকে পুলিশের নাকা চেকিংয়ের দাবি জানানো হয়েছে৷ ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বারাবনীর রুনাকুরা ঘাট, কাল্লা হাসপাতালের কাছে ও জুবিলি মোড় এবং আসানসোলের সালানপুরের বিহার রোড, দেন্দুয়া হিন্দুস্তান কেবলস জল ট্যাঙ্ক, বারিরা শোভাপুরে নাকা চেকিং প্রয়োজন বলে দাবি করেছে বিরোধীরা৷ জামুরিয়ার দারভাঙা, দরবার ডাঙা, বরোকালা ঘাট ও রানিগঞ্জের দামোদর ব্রিজের কাছে, বাঁশরা হাসপাতাল ও কুনুস্তোরিয়া কাঁটা ঘাটেও নাকা চেকিং চেয়েছে সিপিএম৷ দুর্গাপুর ফরিদপুরের হরিবাজার, আকন্দরা ও পান্ডবেশ্বরের শ্যমলা ঘাট, ভুরি ঘাট ও অজয় নদীর ব্রিজের উপর নাকাবন্দি করে বাহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে৷
[ রাজ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হতে দেবে না তৃণমূল, অভিযোগ বাবুলের ]
এছাড়াও সিপিএমের অভিযোগ, বিভিন্ন এলাকায় নগদ অর্থ দেওয়া হচ্ছে ভোটারদের৷ তাই কমিশনের নজরদারি দাবি করেছে তারা৷ কাঁকসায় ইতিমধ্যেই ভোট লুঠ করতে দুর্গাপুর থেকে বহিরাগতরা এলাকার বিভিন্ন হোটেলে আস্তানা গেড়েছে বলে অভিযোগ৷ নাকা চেকিংয়ের ক্ষেত্রে সশস্ত্র পুলিশ বহাল করার দাবি জানিয়েছে সিপিএম৷ সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলার সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় জানান, “যে সব এলাকায় ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে শাসকদল সেই সব এলাকাতেই ভোট লুঠের উদ্দেশ্যে বহিরাগতদের এনে ভরেছে তৃণমূল৷ বীরভূম থেকে বহু সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের আনা হয়েছে৷ ঝাড়খণ্ড সীমান্ত সিল করার দাবি করেছি আমরা৷ ভোটের দিন রক্তপাত বা সম্পত্তির ক্ষতি হলেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারকে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও আমরা আদালতেও যাব৷”
সিপিএমের এই অভিযোগকে স্রেফ নাটক বলে অভিহিত করেছে তৃণমূল৷ তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন দাশু জানান, “সিপিএমের এক নেতা রানিগঞ্জের বাঁশরাতে বীরভূম থেকে বহিরাগতদের আনার চেষ্টা করছিল৷ খবরে থাকার জন্যেই এইসব মিথ্যা অভিযোগ করছে তারা৷ যারা বিজেপিকে ভোট দিতে বলে তাদের নিয়ে যত কম বলা যায় ততই ভাল৷” দুর্গাপুর নগর নিগমের ভোটে শাসকদলের ‘পলিসি’ ফের পঞ্চায়েতে ভোটেও ব্যবহার করা হবে বলেই অভিযোগ করেছে বিরোধীরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.