শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: বাম আমলে সেচ দপ্তরের জমি লিজ নিয়ে তৈরি হয়েছিল পার্টি অফিস। ধীরে ধীরে কাঁচা বাড়ি থেকে পাকা হয়ে উঠেছিল দলীয় কার্যালয়। কিন্তু পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসার পর ‘লিজ’ প্রথা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে লিজের জমিতে নির্মাণ স্ক্যানারের আওতায় চলে আসে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, সমস্ত বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে। তারপরই পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল ২ নং ব্লকের রানিচক গ্রামের সিপিএম পার্টি অফিসটি বেশ কয়েকদিন ধরে জেলা প্রশাসনের নজরে পড়েছিল। নির্মাণ নিয়ে যথাযথ নথিপত্র দেখাতে না পারায় বুলডোজার চালিয়ে ভেঙে ফেলা হল পার্টি অফিসটি। এনিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে জেলা রাজনীতির অন্দরে।
গত কয়েকদিন ধরে দাসপুর ২ ব্লকজুড়ে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করার জন্য মাইকিং, প্রচার করে ব্লক প্রশাসন। মাইকিংয়ের পরও বেআইনি নির্মাণগুলি সরিয়ে নেওয়ার জন্য জবরদখলকারীরা তাগিদ দেখাননি। অভিযোগ, ঠিক একইভাবে সেচ দপ্তরের জল প্রকল্পের জায়গা দখল করে রানিচকে গড়ে উঠেছিল সিপিএমের পার্টি অফিস। সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ নভেম্বর রানিচক গ্রামের বাসিন্দারা সেচ দপ্তরের নজরে আনেন ওই বেআইনি পার্টি অফিসটি। যদিও দল থেকে জানানো হয়, সেচ দপ্তর থেকে লিজ নিয়ে ওই কার্যালয় গড়ে তোলা হয়। অথচ নথি দেখতে চাইলে কমরেডরা লিজের কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বলে জানান জেলাশাসক। এরপর আর অপেক্ষা করেনি প্রশাসন।
সোমবার সেচদপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার উজ্জ্বল মাখাল রানিচকে যান পুলিশ নিয়ে। সিপিএমের পার্টি অফিসটি ভেঙে ফেলার ঘোষণা করেন। সোজা বুলডোজার চালিয়ে তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। উজ্জ্বলবাবু জানিয়েছেন, “সেচ দপ্তরের জায়গা জবরদখল করে ওই বেআইনি নির্মাণ জেলাশাসকের নির্দেশে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এইভাবে সেচ দপ্তরের জায়গা জবরদখল করে আরও যে সমস্ত বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠেছে তাও ভেঙে দেওয়া হবে।” এনিয়ে স্থানীয় সিপিএম নেতা মনোরঞ্জন খাটুয়ার অভিযোগ, ”এটা চক্রান্তমূলক একটা কাজ হল। এই পার্টি অফিস থেকে আমরা বরাবর দলের কাজ পরিচালনা করি। এবারের বন্যায় পার্টি অফিসের দেওয়াল ভেঙে পড়েছিল। তাই তা নতুন করে তৈরি হয়েছে। এর বেশি কিছু নির্মাণকাজ হয়নি। এটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।” তৃণমূলের তরফে অনিল জানার পালটা দাবি, ”কোনও ষড়যন্ত্র নেই। দাসপুরের রানিচক ছাড়াও অন্যান্য জায়গাতেও তো সিপিএমের পার্টি অফিস আছে। সেসব তো ভাঙা পড়ছে না। ওই জমির কোনও কাগজ দেখাতে পারেননি ওঁরা। তাই ভেঙে ফেলা হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.