রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: লোকসভার (Lok Sabha Election 2024) প্রার্থী নাকি প্রচারের মুখ? কেন্দ্রীয় আইনসভায় দলের প্রতিনিধিত্ব নাকি সিপিএমের ‘মরা গাংয়ে জোয়ার’ আনতে সংগঠনের কাজ সামলাবেন? ‘স্টার’ মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা ঠিক করতে নাজেহাল আলিমুদ্দিন।
লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সিপিএমের তৃণমূলস্তরের নেতা-কর্মীরা মীনাক্ষীকে চাইছেন। আলিমুদ্দিনের কাছে তাঁদের আবেদন, প্রচারের মুখ হোক ‘মাটির মেয়ে’ মীনাক্ষী। কারণ, তাঁর বাচনভঙ্গি, লড়াকু মানসিকতা এবং সহজে মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা আলাদাভাবে নজর কাড়ে। লেলিন-মার্কসবাদের তত্ত্বকথা আওড়ানোর বদলে আমজনতার অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সমস্যা তুলে ধরতে পারদর্শী DYFI-এর রাজ্য সভানেত্রী। বিজেপির বদলে বামেদের প্রতি প্রান্তিক জনতার আস্থা ফেরাতে তুরুপের তাস হতেই পারে এই ‘পাশের বাড়ি মেয়ে’ ভাবমূর্তি। ঠিক যে ভাবে বাংলার ‘নিজের মেয়ে’ হয়ে উঠেছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় কর্মীদের দাবি, মানুষের আপদে-বিপদে ছুটে যান মীনাক্ষী। তিনি যেভাবে সন্দেশখালির গ্রামে-গ্রামে ঘুরে বেরিয়েছেন, তা কিন্তু তৎকালীন বিরোধী নেত্রীকে মনে করিয়েছে।
শুধু মানুষের মন জয় নয়, দলের সাংগাঠনিক কাজেও যথেষ্ট দক্ষতা দেখিয়েছেন DYFI নেত্রী। দলের অন্দরেই বাহবা কুড়িয়েছেন নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতার জন্যও। সে ইনসাফ যাত্রায় টানা ৫৪ দিন হাঁটা হোক কিংবা দলের নিচুস্তরের কর্মীদের মনোবল বাড়ানো হোক। এমনকী, ব্রিগেডে যেভাবে জ্বালাময়ী বক্তব্য রেখেছেন তাতে মীনাক্ষীর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আরও একবার প্রমাণ করেছে। এমন অবস্থায় মীনাক্ষী যদি কোনও একটি আসনের প্রার্থী হন, তবে স্বাভাবিকভাবেই তিনি নিজের কেন্দ্রেই ব্যস্ত থাকবেন, সেক্ষেত্রে তাঁকে অন্যান্য কেন্দ্রে প্রচারে পাওয়া যাবে না। পাওয়া যাবে না দলের অন্যান্য কর্মসূচিতে।
ঘাসফুল-পদ্মফুলের জোয়ারের মাঝে লোকসভা নির্বাচনে কোনও একটি আসনে জয় ছিনিয়ে আনা সিপিএমের পক্ষে বেশ কষ্টসাধ্য। বলা ভালো, অনিশ্চিত। ইতিপূর্বে বিধানসভায় মমতা-শুভেন্দুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে হেরেছেন মীনাক্ষী। ফের একবার লোকসভা নির্বাচনে যদি তিনি পরাজিত হন, তবে ‘হেরো’ তকমা সেঁটে যাবে মীনাক্ষীর গায়ে। যা তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যের বেশ কিছু আসন এমন আছে যেখানে মীনাক্ষী প্রার্থী হলে ভালো লড়াই দিতে পারবেন। ভোট কাটাকাটির অঙ্কে জিতেও যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে সংসদে বাম প্রতিনিধি হিসেবে ‘উল্লেখযোগ্য’ মুখ হতে পারে মীনাক্ষী। রাজ্যের প্রান্তিক মানুষের সমস্যা নিয়ে সরব হতে পারবেন তিনি।
ফলে লোকসভা ভোটে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত আলিমুদ্দিন। ভোটের মাঠে ডিফেন্স নাকি অ্য়াটাকিং মিডফিল্ডার হবেন, নাকি ফ্রি নম্বর নাইন করে রাখা হবে ‘ক্যাপ্টেন’ মীনাক্ষীকে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রীতিমতো চুল ছিঁড়তে হচ্ছে সিপিএমের ‘পক্ককেশ’ নেতৃত্বকে। দলীয় সূত্রে এমনই খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.