তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: একুশের বিধানসভা ভোটে (WB Assembly Election) হারের পর এবার যাবতীয় দায়িত্ব থেকে সরে গেলেন শিলিগুড়ির বাম পরিচালিত পুরনিগমের পুরপ্রশাসক অশোক ভট্টাচার্য (Ashok Bhattacharya)। এরপর তিনি নির্বাচনী লড়াই থেকেও সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে খবর। তাঁর বদলে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবকে মাথায় রেখে চার সদস্যের পুরবোর্ড গঠন করল রাজ্য সরকার। আপাতত এই বোর্ডই নাগরিক পরিষেবার দায়িত্বে।
করোনার কারণে রাজ্যে পুরসভার ভোট হয়নি নির্দিষ্ট সময়ে। তাই পুর আইন মেনে আপাতত প্রশাসক বোর্ডের হাতে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং রাজ্য সরকারের সেই বোর্ড তৈরির এক্তিয়ার রয়েছে। বিধানসভা ভোটে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্র থেকে গৌতম দেবের পরাজয়ের পরই তাঁকে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক হিসেবে বসানো হল বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
ভোটের ফলপ্রকাশের দিন প্রথম কয়েক রাউন্ডে পিছিয়ে থাকার পর দুপুরের আগেই গণনাকেন্দ্র ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ির (Siliguri) বামপ্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য। কার্যত হার স্বীকার করে নিয়েছিলেন তিনি। তার তিনদিন পর কার্যত দলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে যাবতীয় দায়িত্ব ছাড়লেন অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, আইএসএফের সঙ্গে জোট ভুল হয়েছিল। তাতেই শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে বামেদের। একুশের ভোটে বাংলার বুক থেকে কার্যত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে বামেরা। প্রসঙ্গত, এর আগে দলের ভরাডুবি নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন দমদম উত্তরের সিপিএম প্রার্থী তথা প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য। তাঁকে শোকজ করা হয়েছিল জেলা কমিটির তরফে। এবার অশোক ভট্টাচার্য আইএসএফ-এর সঙ্গে জোটকে ‘ভুল’ বললেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ ও ২০১৬ সালে রাজ্যে ব্যাপক ঘাসফুল ঝড়ের মাঝেও শিলিগুড়ির বামদুর্গ অক্ষত রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন অশোক ভট্টাচার্য। তিনি ছিলেন বিধায়ক। পরবর্তীতে পুরভোটেও সিপিএমের সেই দাপট অব্যাহত ছিল। তাঁর কৃতিত্বের জন্য ‘শিলিগুড়ি মডেল’ রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছিল, বিস্তর প্রশংসাও কুড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু একুশের ভোটে আর সেই রেকর্ড ধরে রাখতে পারেননি অশোক ভট্টাচার্য। আর ব্যর্থতার পর শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগে যাবতীয় দায়িত্ব থেকে সরে গেলেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.