ছবি: বাসুদেব ঘোষ
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: অনুব্রত মণ্ডলের জেলায় গিয়ে নাম না করে কুকথায় ভরিয়ে দিলেন বাম নেতারা। ‘হারামখোর’ থেকে ‘হিটলার’, ‘শুয়োর’ থেকে ‘মোটা প্রাণী’-র সঙ্গে তুলনা করা হল তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে৷ যা শুনে অনুব্রত মণ্ডলের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, ‘‘ক্ষমতা থাকে তো সিপিএমের নেতারা পরের বার জেলায় এসে মিটিং করে দেখাক৷ নলহাটিতে যদি মিটিং করে, ২০ কিলোমিটার রাস্তায় ছুটিয়ে মারবে এলাকার মানুষ৷’’ যদিও দু’পক্ষের এই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে রাজনীতির ‘কবির লড়াই’ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়৷ বলেন, ‘‘রাজনীতিতে কুরুচিকর মন্তব্য ঠিক নয়।’’ তবে তাঁর দাবি, তৃণমূল-সিপিএমের এই পরস্পর বিরোধী মন্তব্য আদতে বিজেপিকে বাড়তি অক্সিজেন জোগানো৷
রবিবার লং মার্চের উদ্বোধন করতে নলহাটির লোহাপুর যান প্রাক্তন সাংসদ তথা সারা ভারত কৃষক সভার সম্পাদক হান্নান মোল্লা। অনুব্রতর নাম না করে বলেন, “বীরভূমের হিটলারি শাসন চলছে৷ তবে, এই হিটলারের পতন হবেই৷ তখন, তাঁর দেহ কবরে যাবে, না শ্মশানে, না রাস্তায় কুকুর ওদের মৃতদেহ খুবলে খাবে, সেটা ভবিষ্যৎ বলবে৷” সিপিএম নেতার এই মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক৷ সরাসরি সিপিএম নেতাকে আক্রমণও করেন তিনি৷ এর পর ওই সিপিএম নেতা গ্রামে ঢুকলে ২০ কিলোমিটার রাস্তা ছুটিয়ে মারা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন অনুব্রত৷
[গ্রামে নেই শৌচাগার, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যেতে হয় দেড় কিলোমিটার ]
এদিন বীরভূম জেলার চার প্রান্ত থেকে লং মার্চ বের হয়৷ বীরভূমের নলহাটি থানার কাঁটাগড়িয়া মোড়ে মূল অনুষ্ঠানের সূচনা করেন সারা ভারত কৃষক সভার সম্পাদক হান্নান মোল্লা। সকালে মঞ্চ থেকে জোড়া সাদা পায়রা উড়িয়ে পদযাত্রার সূচনা করেন তিনি৷ উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম, সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হান্নান মোল্লা বলেন, “আজ বীরভূমে তৃণমূলের এতো অত্যাচার, জুলুম চলছে। গুণ্ডাদের রাজত্ব চলছে। হারামে খেয়ে খেয়ে শুয়োরের মতো চেহারা হচ্ছে। সেই সব গুণ্ডারা অত্যাচার করছে আপনাদের উপর। এদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুললে এরা নেড়ি কুত্তার মতো ছুটে পালিয়ে যাবে৷’’
[মাসতুতো দাদার সঙ্গে পরকীয়া, স্বামীকে খুন করে শ্রীঘরে স্ত্রী]
সিপিএম নেতার এই আক্রমণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অনুব্রত মণ্ডলের নাম না করে তিনি বলেন, “ও তো হারাম খেয়ে খেয়ে বিশেষ প্রাণীর মতো মোটা হয়েছে। ও আগে নিজের স্বাস্থ্যটা কমাক। তারপর অন্যদের স্বাস্থ্য কমাবার উপদেশ দেবে। হারামখোরদের বিরুদ্ধে মানুষ রাস্তায় নেমেছে। লড়াইয়ের মধ্যে দিয়েই হারামখোরদের উচ্ছেদ করবে৷’’ অনুব্রত মণ্ডল আরও বলেন, “ও যদি বাপের ব্যাটা হয়, তাহলে দ্বিতীয়বার জেলায় পা দিয়ে দেখুক। সিপিএম নেতারা যদি এই কথা শুনে প্রতিবাদ না করে, তাহলে তাঁদের কপালেও দুঃখ আছে৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.