শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: যেমন কথা, তেমন কাজ। পঞ্চায়েত ভোটে জিতে প্রতিশ্রুতি পূরণে নজির গড়লেন সিপিএম (CPM) প্রার্থী। ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল সহায়-সম্বলহীন এক বৃদ্ধার ঘর। জেতার পর নিজে চাঁদা তুলে, শ্রম দিয়ে নতুন ঘর বানিয়ে বৃদ্ধার ভরসা জোগালেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী গৌরী রায় শীল। শুধু তাই নয়, আলোও এনে দিলেন সেই ঘরে। তবে এমন ভাল এক নজিরের মাঝেও রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, বৃদ্ধা তাঁদের সাহায্য চাইলে অনেক আগেই নতুন ঘর তৈরি হয়ে যেত।
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নাজির পাড়া ১৭/১৬০ নং বুথ। এখানকার বাসিন্দা মিলন রায়। স্বামী মারা যাওয়ার পর মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে এবং তিন মেয়েকে নিয়ে ভাঙা ঘরে দিনযাপন করছিলেন তিনি। বছর কয়েক আগে প্রবল ঝড়ে সহায়সম্বলহীন এই বৃদ্ধার মাথা গোঁজার ঠিকানাও ভেঙে পড়ে। অগত্যা সন্তানদের নিয়ে বাড়ির পাশে একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আবাস যোজনায় আবেদন করেও ঘর পাননি মিলনদেবী। ফলে ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রেই কোনওক্রমে দিন কাটছিল।
এবারের পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় সিপিএম কর্মীদের। তাঁরা কথা দিয়েছিলেন, “ভোটে হারি কিংবা জিতি, আমরা তোমার বাড়ি বানিয়ে দেব।” ভোট পর্ব মিটেছে। এবার ওই গ্রামে জিতেছেন সিপিএম প্রার্থী গৌরী রায় শীল। আর ভোটে জেতার ১৫ দিনের মধ্যেই তাঁর নেতৃত্বে প্রতিশ্রুতি পূরণে ঝাঁপিয়ে পড়েন সিপিএম নেতা, কর্মীরা। গত সপ্তাহে সুকান্ত নগরের বৃদ্ধা সুফিনা খাতুনের ঘরে আলোর ব্যবস্থা করার পর বৃহস্পতিবার নিজেরাই চাঁদা তুলে, স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে বৃদ্ধা মিলন রায়ের ঘর বানিয়ে দিলেন তাঁরা।
দীর্ঘদিন পর নিজস্ব আশ্রয়ে ফিরতে পেরে মুখে হাসি ফুটেছে বৃদ্ধার। জানালেন, বাসা বাড়িতে কাজ করে দিন চলে। বৃদ্ধাভাতা পান না। ঘরের জন্য আবেদন করেও পাননি। ঝড়ে ঘর ভেঙে যাওয়ার পর একটা ত্রিপল পর্যন্ত তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ বৃদ্ধার। এনিয়ে এলাকার তৃণমূল নেতা তথা খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রাক্তন উপপ্রধান সুভাষ চন্দ বলেন, ”আবাস যোজনায় ঘর দেওয়া বন্ধ। তাছাড়া উনি আমাদের কাছে আসেননি। যদি আমাদের কাছে আসতেন, তাহলে আমরাই টিন কিনে ওনার ঘর তৈরি করে দিতাম।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.