সৌরভ মাঝি, বর্ধমান: নরেন্দ্র মোদির সরকারকে হারাতে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে একজোট হতে হবে। সারা দেশের সব অসাম্প্রদায়িক দল একজোট হলে মোদি সরকারের পতন হবেই। সোমবার বর্ধমানের টাউন হল ময়দানে প্রয়াত নিরুপম সেনের স্মরণসভায় এসে এই মন্তব্য করলেন সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক তথা পলিটব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাট। তাঁর কথার রেশ ধরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও বিজেপিকে হঠাতে একের বিরুদ্ধে একের লড়াইয়ের কথা বলেন। সম্প্রতি ব্রিগেড সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ‘বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও’ আওয়াজ তোলেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে সূর্যকান্তবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ব্রিগেডে একটা মিটিং করেন। উনি বলেছেন বটে বিজেপি হঠাও। সেটা ভাল। আমি সেটা নিয়ে কিছু বলছি না। প্রায় সব পার্টি বলে গিয়েছে বিজেপি হঠাও। কয়েকজন বলে গিয়েছেন ওয়ান ইজ টু ওয়ান লড়াই হবে। রাজ্যে ফিরে ওয়ান ইজটু ওয়ান করতে পারছে না। আমরা তাদের সাফল্য কামনা করি। আমাদের লড়াই হচ্ছে ওয়ান ইজ টু ওয়ান। কিন্তু আসলে বিজেপি ও তৃণমূল হচ্ছে টু-ইন-ওয়ান। এরা মনে হচ্ছে দুটো। কিন্তু এরা একটাই।”
এদিন স্মরণসভা শেষে প্রকাশ কারাট সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “বিজেপিকে হারাতে গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক দলগুলিকে জোটবদ্ধ হতে হবে সারা রাজ্যে। দেশে এখন কঠিন সময়। বিজেপিকে হারাতে হবে। আর অসাম্প্রদায়িক দলগুলি একজোট হলেই হারবে মোদি সরকার।” একের বিরুদ্ধে একের লড়াইয়ের কথা বললেও রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের কোনও প্রশ্নই নেই বলে সাফ জানালেন প্রকাশ কারাট। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি সরকারের আর্থিক নীতির কারণে সারা দেশে বিপন্ন কৃষকরা। প্রতি বছর ১২ হাজার কৃষক আত্মঘাতী হচ্ছেন। নোটবন্দির কারণে এক কোটির বেশি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। সাধারণ মানুষ কাজ হারাচ্ছে আর মোদি সরকারের আমলে ফুলে ফেঁপে উঠছে পুঁজিপতিরা। এর থেকে মুক্তি পেতে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে একজোট হতে হবে বলে মন্তব্য করেন কারাট।
এদিনের সভায় সূর্যকান্তবাবু দাবি করেন, রাজ্যে তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরতে শুরু করেছে। তাদের গণভিত সরতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, “একটা চোরাস্রোত ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তৃণমূলকে সরাতে পারে বিজেপি। বিজেপিকে শক্তিশালী করতে হবে। ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছিল। সেটা বন্ধ করা গিয়েছে। মোদি অপরাজেয় নয়। সাম্প্রতিক পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে সেটা প্রমাণিত।” পাশাপাশি, নিচুতলার যেসব কর্মী অন্য দলের ঝাণ্ডা ধরেছিলেন, তাঁদের দলে ফেরানোর কথা বলেন সূর্যকান্তবাবু। একই সঙ্গে দলের নীচুতলার নেতাদের নাকউঁচু ভাবের সমালোচনাও করেন তিনি। তাঁর কথা, আমিই সব জানি। সাধারণ মানুষ কিছু জানে না মানসিকতার বদল ঘটাতে হবে। নিচুতলার সেই সব সাধারণ কর্মীদের আবার ফেরাতে হবে। তবে কলকাতা-দিল্লিতে যেসব বিশ্বাসঘাতক রয়েছে বা চুরি করে অন্য দলে গিয়েছে, বা যে নেতা দল পালটেছে তাদের ফেরানোর কোনও প্রশ্নই নেই বলে সাফ জানিয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.