রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলায় বিরোধী বাম ঐক্য হলেও তা ‘বামফ্রন্ট’ নামে চায় না সিপিআই (এমএল) লিবারেশন। মানুষে মানুষে বিভেদপন্থী রাজনীতির স্রষ্টা বিজেপিকে রুখতে মূল বিরোধী শক্তি হিসেবে যেমন বামেদের উঠে আসতে হবে তেমনই তৃণমূলের বিরুদ্ধেও আন্দোলন জারি রাখতে হবে বলেই বক্তব্য তাদের।
সোমবার লিবারেশনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এ প্রসঙ্গে বলেন, “বাংলায় বৃহত্তর বাম ঐক্য দরকার। প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে বামপন্থাকে উঠে আসতে হবে। বৃহত্তর বাম ঐক্যে যৌথ আন্দোলন দরকার। সেক্ষেত্রে লিবারেশন ও সিপিএমকে হাত ধরাধরি করে চলতে হবে। আর সেই বিরোধী বাম শিবিরের মঞ্চের নাম বামফ্রন্ট নয়, নতুন কোনও নাম দরকার।” কেন বৃহত্তর বাম ঐক্য বামফ্রন্টের ব্যানারে নয়? দীপঙ্করবাবুর জবাব, “বামফ্রন্ট বলতে এ রাজ্যের একটা সরকারকে বুঝতো মানুষ। সেই বামফ্রন্ট সরকারের ভূমিকা নিয়ে মানুষের প্রশ্ন ছিল বলেই সরকারটা চলে গিয়েছে। তাই এখন বিরোধী বাম ঐক্যকে সরকার থেকে আলাদা করে দেখা দরকার। তাই অন্য নাম দেওয়া উচিত।”
একুশের বিধানসভা ভোটের আগে শুধু ‘নো ভোট টু বিজেপি’ ডাক দিয়েছিল সিপিআই(এমএল) লিবারেশন। যেটা নিয়ে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে বাদানুবাদ হয়েছিল দীপঙ্কর ভট্টাচার্যর। সেই সময় প্রশ্ন ওঠে, বিজেপিকে আটকাতে তাহলে কি তৃণমূলকে সমর্থনে আপত্তি নেই লিবারেশনের? এই পুরনো বিতর্কের বিষয়টি এদিন স্পষ্ট করে দিয়ে দলের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘নো ভোট টু বিজেপি’ স্লোগানটা আমাদের সেই সময় সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল বিজেপিকে বাংলায় আটকাতে। মানুষ বিজেপিকে আটকে দিয়েছে। আর এবার আমাদের স্লোগান ‘নো ভোট টু বিজেপি’ যেমন থাকছে পাশাপাশি স্লোগান থাকবে তৃণমূলকেও ছাড় নয়। এই বিষয়ে দীপঙ্করবাবু বলেন, বাংলায় বিজেপি বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দল। বিজেপিকে সার্বিকভাবে দুর্বল করতে হলে বিরোধীপক্ষে বামপন্থীরা সঠিক জায়গা দখল করুক। আর সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী ১৩ দলের ঐক্যে তৃণমূলও রয়েছে। সেখানে পাঁচটি বামদলের মধ্যে লিবারেশনও রয়েছে। দেশে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে কংগ্রেসের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই রয়েছে বলে মনে করেন লিবারেশন নেতৃত্ব।
এদিকে, দেশজুড়ে মূল্যবৃদ্ধি, পেট্রোল-ডিজেল-সহ রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পাঁচটি বামপন্থী দল ২৫ থেকে ৩১ মে বিক্ষোভ কর্মসূচি করবে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তৃণমূল সরকারের প্রবল সমালোচনা করেও প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে লিবারেশনের সদ্য সমাপ্ত রাজ্য সম্মেলনে। এদিন রাজ্যদপ্তরে লিবারেশনের সাংবাদিক বৈঠকে দীপঙ্করবাবু ছাড়াও ছিলেন পার্থ ঘোষ, কার্তিক পাল, অভিজিৎ মজুমদার, বাসুদেব বসু প্রমুখ নেতারা। সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের নতুন রাজ্য কমিটি হয়েছে ৬১ জনের। ছাত্র-যুব-ক্ষেতমজুর-শ্রমিক, সমস্ত অংশের প্রতিনিধিরাই রয়েছে। দেউচা-পাচামি প্রকল্পকে বাতিলের দাবি করা হয়েছে। বিভিন্ন ইস্যুতে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.