Advertisement
Advertisement
করোনা টেস্ট

Covid-19 পরীক্ষা বাড়ানোর ভাবনা, এবার বিশ্ববিদ‌্যালয়ের পিসিআরে হবে করোনা নির্ণয়

স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, এ রাজ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই ‘রিয়েল টাইম পিসিআর’ বা আরটিপিসিআর মেশিন রয়েছে।

Covid 19 test may be organised in State university's PCR
Published by: Sayani Sen
  • Posted:April 29, 2020 2:32 pm
  • Updated:April 29, 2020 2:32 pm

গৌতম ব্রহ্ম: গত প্রায় একমাসে পশ্চিমবঙ্গে কোভিড-১৯ টেস্ট হয়েছে ১৩ হাজারের সামান্য বেশি। আর গত চব্বিশ ঘণ্টায় ১১৮০টি। নোভেল করোনার সাম্প্রতিক বাড়বাড়ন্তের সামনে যে সংখ্যাটা খুব অপ্রতুল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাই করোনা টেস্টের সংখ্যা বাড়াতে এবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও করোনা যুদ্ধে শামিল করার প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য।

স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, এ রাজ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই ‘রিয়েল টাইম পিসিআর’ বা আরটিপিসিআর মেশিন রয়েছে। সেগুলিকেই এবার করোনা নির্ণয়ে কাজে লাগানো হবে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ও বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের সঙ্গে ইতিমধ্যে কথাও হয়েছে নবান্নের। ঠিক হয়েছে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আরটিপিসিআর মেশিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে স্থানান্তরিত করা হবে। বালিগঞ্জের মেশিনটি চলে যাবে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ও বেলগাছিয়ার প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরটিপিসিআরও কাজে লাগানোর ভাবনাচিন্তা রয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরের। উল্লেখ্য, সন্দেহভাজনের লালারসে নোভেল করোনা ভাইরাস রয়েছে কি না তা নির্ণয় করে এই আরটিপিসিআর মেশিন। এই মুহূর্তে নাইসেড, পিজি হাসপাতাল, স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ, রাজারহাটের চিত্তরঞ্জন ক্যানসার ইনস্টিটিউটে এই মেশিন ব্যবহার করে সোয়াব টেস্ট হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় যা নিতান্তই অপ্রতুল। টেস্টের সংখ্যা বাড়াতে সবাই দুটো শিফটে কাজ করছে। তাও দু’দিনের নমুনা জমে যাচ্ছে। ফলে, রিপোর্টের জন্য দুই থেকে তিনদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আরটিপিসিআর মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বসে গেলে এই সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: টিকিয়াপাড়ার ঘটনার জের, সরানো হল হাওড়ার পুর-কমিশনারকে]

বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, যত বেশি টেস্ট, করোনা প্রতিরোধের অস্ত্র তত শানদার। যে প্রসঙ্গে অবধারিতভাবে উঠে আসছে কেরলের নাম। লালারসের নমুনা যাচাই করার প্রক্রিয়াটিকে তুঙ্গে নিয়ে গিয়ে ওই রাজ্য করোনা যুদ্ধে বেনজির সাফল্য পেয়েছে। এমতাবস্থায় পশ্চিমবঙ্গে টেস্টের গতি কী ভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে স্বাস্থ্যমহলে ভাবনাচিন্তা চলছে। মঙ্গলবার দিনভর নবান্নের কর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেন। প্রথমে ঠিক হয়েছিল, মেডিক্যাল কলেজের টেকনিশিয়ানরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগে গিয়ে টেস্ট করবেন। কিন্তু এই কাজে যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে বলে বিভাগীয় প্রধানরা আপত্তি তোলেন। তারপরই আরটিপিসিআর মেশিনগুলিকে মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত। ঠিক হয়েছে, মেশিনগুলি যে কোম্পানির, তার ইঞ্জিনিয়াররাই মেশিন সরানোর কাজ করবেন। মাইক্রোবায়োলজিস্টদের মেশিন চালানোর খুঁটিনাটি বুঝিয়ে দেবেন তাঁরাই। করোনা পর্ব চুকলে মেশিনগুলি জীবাণুমুক্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাস্থানে ফিরে যাবে। ‘এইচআইভি’র মতো রেট্রোভাইরাসের থেকে ‘রিভার্স ট্রান্সকিপ্টেজ’ উৎসেচক বের করে তা করোনা নির্ণয়ের কিটে ব্যবহার করা হয়। এর কাজ হল করোনায় থাকা ‘আরএনএ’ থেকে ‘কমপ্লিমেন্টারি ডিএনএ’ তৈরি করা।

‘পিসিআর’ বা পলিমারাইড চেন রিঅ্যাকশন’ মেশিন সেই ডিএনএ’র সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। তারপরই নির্ণয় হয় ভাইরাসের চরিত্র। ‘রিয়েল টাইম পিসিআর’-এ কাজটা অত্যন্ত দ্রুত হয়। কারণ, ডিএনএগুলি ‘অ্যামপ্লিফাই’ হওয়ার (সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার) সময় আরটিপিসিআর ভাইরাসের উপস্থিতি সংক্রান্ত সবুজ সংকেত দিতে থাকে। ফলে আলাদা করে ভাইরাসের চরিত্র নির্ণয়ের দরকার পড়ে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি, জেনেটিক্স, ফিজিওলজি, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের জিনগত গবেষণা ও পড়াশোনায় এই মেশিন অত্যন্ত জরুরি। সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে চিকিৎসকমহল। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে নেফ্রোলজিস্ট ডা. প্রতিম সেনগুপ্ত, লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. অভিজিৎ চৌধুরি থেকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রভাসপ্রসূণ গিরি সবার একটাই বক্তব্য, করোনা যুদ্ধের অন্যতম হাতিয়ার আরটিপিসিআর। শিক্ষাঙ্গনের যন্ত্রগুলিকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত বৈপ্লবিক। ভাইরোলজিস্টদের প্রতিক্রিয়া, “অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। রাজ্য চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র ও টেকনিশিয়ানদেরও এই কর্মযজ্ঞে শামিল করতে পারে। তবে যেহেতু এটি অত্যন্ত সংক্রামক ব্যাধি, তাই জড়িত সবাইকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি।”

[আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে সদ্যোজাত-সহ প্রসূতির পরিবারকে ঘরছাড়া করল বাড়িওয়ালা]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement