ফাইল ছবি
অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: করোনা ভাইরাস (COVID-19) থেকে সতর্ক থাকার কথা বারবার বলা হয়। একইভাবে করোনা আক্রান্তের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার কথাও বলা হয়। কিন্তু বেলদা ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের যুবকের ক্ষেত্রে এমনটা হল না। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর ঠাঁই হল বাড়ির কাছের মুরগির খামারে। কোনও পাড়া প্রতিবেশী কিংবা স্থানীয় বাসিন্দার জন্য নয়, পরিবারের সদস্যদেরই চরম অমানবিক আচরণের শিকার হতে হল তাঁকে।
ঘটনাটি ঘটেছে বেলদা থানার তুতরাঙ্গা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের মহিষামুড়া গ্ৰামে। এই গ্ৰামের এক যুবকের বৃহস্পতিবার রাতে করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়। তারপর থানা ও স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে যোগাযোগ করা হয়। তখন আক্রান্ত যুবক জানান, যেহেতু তাঁর কোনও উপসর্গ নেই তাই বাড়িতে হোম আইসোলেশনে থাকবেন। কিন্তু শুক্রবার সকালে দেখা যায়, বাড়ির কোনও আলাদা ঘরে নয়, যুবককে রাখা হয়েছে বাড়ির কাছে একটি মুরগির খামারে। বিষয়টি নিয়ে গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। আশাকর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। তারপর দুপুরের দিকে বেলদা ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে গাড়ি পাঠিয়ে যুবককে মুরগির খামারের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়।
জানা গিয়েছে, কর্মসূত্রে ঝাড়খণ্ডে যুবকের যাতায়াত রয়েছে। ১৮ তারিখ ঝাড়খণ্ড থেকে ফেরার পর বেলদা গ্ৰামীণ হাসপাতালে যুবকের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তারপর বাড়ির লোকজন করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে যুবককে মুরগির খামারে থাকতে বাধ্য করেন। এই ব্যাপারে যুবকের এক দাদা জানিয়েছেন, মুরগির খামারের ভেতর ভালো জায়গায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ভাইকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল। বাড়িতে কোনও একটা ঘরে আলাদা করে না রেখে মুরগির খামারে কেন রাখা হয়েছিল? তার কোনও ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি। নারায়ণগড় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মণ্ডল জানিয়েছেন, আশাকর্মীদের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর যুবককে মুরগির খামারের ভেতর থেকে উদ্ধার করে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের সেফ হোমে পাঠানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.