সুদীপ রায়চৌধুরি: করোনা আতঙ্ক এবার হলদিয়া বন্দরেও। বন্দরের এক কর্মী COVID-19 আক্রান্ত। তিনি সম্প্রতি দিল্লিতে নিজামুদ্দিন মারকাজে তবলিঘি জামাতের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। তারপর এখানে এক সপ্তাহ ধরে কাজ করছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ফলে বন্দরের বাকি সমস্ত কর্মী আতঙ্কে কাজ আসেননি শুক্রবার। ফলত হলদিয়া বন্দরের কাজকর্ম সম্পূর্ণ বন্ধ বলে জানা গিয়েছে।
দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণার পর অন্যান্য জরুরি পরিষেবার মতো স্বাভাবিক কাজকর্ম হচ্ছিল কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে। জাহাজ থেকে মাল খালাসের কাজ সচল ছিল। তবে লকডাউনের জেরে ৭০ শতাংস কর্মক্ষম ছিল বন্দরগুলি। তবে এর মধ্যে বিপত্তি বাধে আইআরসি প্রাইভেট বার্থের একজন কর্মী COVID-19 পজিটিভ হওয়ায়। জানা গিয়েছে, এই ব্যক্তি সম্প্রতি নিজামুদ্দিন মারকাজের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। এই অনুষ্ঠানে জমায়েতকারী ৯০০০ জন মানুষ চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র সরকার। তাঁদের মধ্যে এই ব্যক্তিও ছিলেন। বুধবারই তাঁকে উদ্ধার করে কোয়ারেন্টাইনে রাখার বন্দোবস্ত করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এই খবর চাউর হয়ে যেতেই আতঙ্কের সৃষ্টি হয়ে হলদিয়া বন্দরে।
দিল্লির নিজামুদ্দিন ফেরত হলদিয়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তির করোনা পজিটিভ মিলেছে। তিনি ৩১ মার্চ থেকে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি ছিলেন। ২ মার্চ তাঁর সোয়াব পাঠানো হয় কলকাতায়। রাত ১০টা নাগাদ বেলেঘাটা আইডি থেকে খবর আসে তাঁর করোনা পজিটিভ। রাতেই তাঁকে বেলেঘাটায় স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁর পরিবারের ৫ জনকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই শুক্রবার সকাল থেকে হলদিয়া শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। সিআইএসএফ বন্দর ফাঁকা করছে। নিজামুদ্দিন ফেরত ওই ব্যক্তির করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসায় হলদিয়া বন্দরে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ ওই ব্যক্তি বন্দরের ১৩ নম্বর জেনারেল কার্গো বার্থ বা জিসি বার্থে একটি বেসরকারি ক্রেন অপারেটিং সংস্থায় সুপার ভাইজারের কাজ করেন।
বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি ২৪ মার্চ দিল্লি থেকে ফেরার পর বন্দরে কর্মস্থলে গিয়েছিলেন। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে বন্দরের শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে। এখন বন্দরের ওই বার্থের সিসিটিভি ক্যামেরা চেকিং করে ওই ব্যক্তির গতিবিধি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার অমল দত্ত বলেন, ওই ব্যক্তি বন্দরে দিল্লি থেকে ফেরার পর বন্দরে এসেছিল কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তা দেখা হচ্ছে। সবাইকে বলা হচ্ছে, যাঁরা সংস্পর্শে এসেছিলেন তাদের জানাতে বলা হয়েছে। সবাই আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় তার উপর নজর রাখা হচ্ছে।
যদিও কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার জানিয়েছেন, ‘পোর্ট ট্রাস্টের যাঁরা কর্মী রয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই কাজে এসেছেন। কিন্তু বেসরকারি সংস্থার কর্মী-আধিকারিকরা কেউ কাজে আসেননি। তাই হলদিয়া বন্দরের কাজকর্ম আপাতত চলছে তবে কিছুটা ব্যাহত হয়েছে।’ এদিকে, যাঁরা আগে কাজে এসেছিলেন তাঁরাও চলে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.