Advertisement
Advertisement

Breaking News

খুন

দাদার হাত থেকে ছিটকে আসা গুলি প্রাণ কাড়ল ভাইয়ের, নিমতার ঘটনায় ধৃত ২

নিছকই দুর্ঘটনা নাকি ইচ্ছাকৃত খুন, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

Cousin murdere by the bullet from elder brother at Nimta
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 26, 2019 12:37 pm
  • Updated:August 26, 2019 12:43 pm  

আকাশনীল ভট্টাচার্য ও রাহুল চক্রবর্তী: আড্ডা দিতে গিয়ে দাদার হাতে খুন হয়ে গেল ভাই। মর্মান্তিক ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনার নিমতা থানা এলাকার অম্বিকানগরের। রবিবার রাতের ঘটনায় দাদা এবং এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে একটি বন্দুক। আড্ডায় উপস্থিত বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা ঘটনার কিনারা করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

[আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা ভেঙে ওষুধ নিয়ে পালাল চোর, তদন্তে নেমে অবাক পুলিশ ]

উত্তর দমদম পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের অম্বিকানগরের বাসিন্দা সুরজিৎ এবং অভিজিৎ বারুই সম্পর্কে জ্যাঠতুতো-খুড়তুতো ভাই। সুরজিৎ উত্তর দমদম পৌরসভার অস্থায়ী কর্মী, তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। এই পুরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি নির্মল কুণ্ডু,  যিনি দিন কয়েক আগে খুন হয়েছেন, সুরজিৎ তাঁর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। অভিজিৎ মৌরি স্পোর্টিং ক্লাবের ফুটবলার। একই বাড়িতে পাশাপাশি ঘরে থাকে অভিন্নহৃদয় দুই ভাই। একইসঙ্গে ওঠাবসা দুজনের। তাই আড্ডার সঙ্গীরাও সকলেই এক। গোটা দিন কাজের শেষে রাত্রিবেলা দুই ভাই বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির কাছেই শিবতলায় কিছুক্ষণ সময় কাটায় ,গল্পগুজব করে। প্রতিদিনের মতো রবিবারও সেই আড্ডা চলছিল।সুরজিৎ, অভিজিৎ ছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁদের তিন বন্ধু – সঞ্জয় মিত্র, সঞ্জীব পাল, পল্টু বসাক। স্থানীয়দের কথায়, আড্ডায় মদ্যপানও চলছিল। সেখানেই ঘটে যায় চরম দুর্ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, এদেরই কারও কাছে ছিল একটি ওয়ান শটার। সেটি নিয়েই নানা কসরৎ চলছিল। একজনের হাত আরেকজনের হাতে যাচ্ছিল সেটি। কীভাবে তা ব্যবহার করতে হয়, তাও বোঝার চেষ্টা করছিল বন্ধুরা। বন্দুক যখন সকলের হাত ঘুরে সুরজিতের হাতে আসে, তখনই আচমকাই সেখান থেকে একটি গুলি ছিটকে বেরোয়। এক বন্ধুর হাতের নিচ দিয়ে গিয়ে তা সরাসরি অভিজিতের বুকে লাগে। রক্তাক্ত
অবস্থায় সে লুটিয়ে পড়ে। দৃশ্য দেখে ভয় পেয়ে যান সকলেই। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ভাইকে তুলে নিয়ে ঘোলা হাসপাতালে ছোটেন সুরজিৎ ও অন্যান্য বন্ধুরা। অভিজিতকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘড়িতে সময় তখন রাত প্রায় সাড়ে বারোটা।
এদিকে, রাতের বেলা গুলির শব্দ কনে পৌঁছায় এলাকার প্রায় সকলেরই। সুরজিৎ, অভিজিতের বাড়ির লোকজনও শব্দ পান। কিন্তু প্রথমে কেউই বুঝতে পারেননি ঘটনাটা ঠিক কী ঘটে গিয়েছে। কয়েকজন বাইরে বেরিয়ে এসে দেখেন, যেখানে আড্ডা চলছি, সেই জায়গা রক্তাক্ত এবং কেউ নেই। তাঁরাই গিয়ে বারুই বাড়িতে খবর দেন। সুরজিৎ, অভিজিতের দিদি প্রিয়াঙ্কা বলছেন, ‘আমরা সবাই খাওয়াদাওয়া করে ঘুমনোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আচমকা গুলির শব্দ শুনতে পাই। কিছুক্ষণ পর আমাদের দরজায় ধাক্কা। খুলে দেখি, প্রতিবেশীরা দাঁড়িয়ে। তাঁরাই আমাদের বলেন যে ভাইরা যেখানে আড্ডা দিচ্ছিল, সেখানে গুলি চলেছে। আমরা যেন খবর নিই।’ সঙ্গে সঙ্গে তিনি অভিজিতকে ফোন করেন। তাঁর ফোনে কোনও উত্তর না পেয়ে সুরজিতকে ফোন করতেই সে দ্রুত দিদিকে হাসপাতালে যেতে বলে। ততক্ষণে অভিজিতের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: দূরত্ব ঘোচাল সোশ্যাল মিডিয়া, ফেসবুকে অসুস্থ মায়ের ছবি দেখে ছুটে এল মেয়ে]

যে দুই ভাই একেবারে অবিচ্ছিন্ন ছিল, নিমেষের মধ্যে একজনের হাত থেকে গুলি ছিটকে আরেকজনের জীবনহানির ঘটনায় হতবাক বাড়ির সদস্যরা। ঘটনার তদন্তে নেমে নিমতা থানার পুলিশ সুরজিৎ এবং আরেক বন্ধু সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, গুলিটি সুরজিতের হাত থেকেই বেরিয়েছে। তবে আরও বেশ কিছু প্রশ্ন ভাবাচ্ছে পুলিশকে। উদ্ধার হওয়া লাইসেন্সহীন বন্দুকটি কার, কীভাবে তাদের
কাছে এল, এসব খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গুলি ছিটকে যাওয়া নিছকই দুর্ঘটনা নাকি সম্পত্তিগত কোনও বিবাদের জেরে ইচ্ছাকৃতভাবে খুন, পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তবে এভাবে দাদার হাতে ভাইয়ের খুন হয়ে যাওয়ার ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না কেউই।

nimta-brothers
দুই ভাই – অভিজিৎ ও সুরজিৎ

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement