ছবি: বাসুদেব ঘোষ
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বিড়ি বেঁধে সংসার চলে তাঁদের৷ কিন্তু, অভাবের সংসারের হঠাৎ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে হাজির ৪৫ হাজার টাকা৷ অযাচিত সেই টাকা শুক্রবার ব্যাংক থেকে তুলে বিডিও অফিসে ফিরিয়ে দিলেন বেবি বিবি ও তাঁর স্বামী শেখ আকাল৷ দরিদ্র পরিবারের এই দৃষ্টান্তের উপহার স্বরূপ তাঁদেরও একটি আবাস যোজনায় ঘরের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানালেন সিউড়ি এক ব্লকের বিডিও মহম্মদ বদরুদ্দুজা৷
কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের কানাইপুর ভাটিপাড়ায় মাটির ঘরে বাস বেবি বিবি ও তাঁর স্বামী আকাল শেখের। মাটির দেওয়াল। মাথায় খড়ের চালা। তাতে ত্রিপল দিয়ে কোনও রকমে বর্ষার জল আটকানোর চেষ্টা। নিজেরই ঘর নেই তাঁদের, অথচ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির ৪৫ হাজার টাকা চলে এসেছে৷ বিষয়টি জানাজানি হয় দু’দিন আগে। বেবি বিবি জানান, গ্যাসের ভরতুকি ব্যাংকে ঢুকছে কি না, তা দেখতে ব্যাংকের পাশ বই নিয়ে যান। বই আপডেট করার পর দেখা যায়, তাঁদের অ্যাকাউন্টে অযাচিত টাকা ঢুকেছে৷ বিষয়টি পেশায় দিনমজুর স্বামী শেখ আকালকে বলেন বেবি বিবি৷
তিনি বলেন, ‘‘আমরা দু’জনে ঠিক করি, যাঁর বাড়ির জন্য টাকা এসেছে, সে নিশ্চয়ই আমাদের থেকেও গরীব। গরীবের টাকা নিয়ে আমরা বড়লোক হতে চাই না।’’ তাই দু’জনে বৃহস্পতিবার সিউড়ি এক নম্বর ব্লকে গিয়ে বিডিওর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানান। বিডিও মহম্মদ বদরুদ্দুজা বলেন, ‘‘চলতি আর্থিক বছরে তার ব্লকে ৩০২৫টি আবাস যোজনার বাড়ির জন্য প্রথম কিস্তির টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রাহকদের ব্যাংকে অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। এই দম্পতি আসার পর আমরা ব্যাংকে স্ক্রুটিনি করে জানতে পেরেছি, রাজারপুকুর সংসদের নিমডাঙ্গাল পাড়ার মহুলা মাড্ডির বাড়ি তৈরির টাকা বেবি বিবির অ্যাকাউন্টে ঢুকে যায়। প্রাথমিকভাবে গাফিলতিটি ব্যাংকের। কিন্তু নিজেদের অ্যাকাউন্টে টাকা পেয়েও যেভাবে গরীব একটি পরিবার সততার পরিচয় দিল, সেটা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে রইল।’’ তবে বিডিও জানান, যেহেতু বেবি বিবি ও আকালের নিজেদের ঘর নেই। আবাস যোজনার তালিকায় তাঁদের নাম উঠেছে কিনা তাঁর জানা নেই৷ তবে, তাঁরাও যেন আবাস যোজনায় একটি ঘর পান, সে ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের কাছে তদবির করেন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.