সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: Paytm ব্যবহার করে বড়সড় প্রতারণার শিকার হলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের এক দম্পতি। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া গিয়েছে এক লক্ষ আটান্ন হাজার টাকা। পেটিএম ওয়ালেটে রাখা দশ হাজার টাকাও তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই দম্পতি ইতিমধ্যেই লালবাজার অপরাধ দমন শাখা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলায় সাইবার ক্রাইম দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন।
বিষ্ণুপুর থানার পৈলানের বাসিন্দা সুদীপ্ত ঘোষ ও অর্পিতা ঘোষ। সুদীপ্তবাবু একজন গ্রিলের ব্যবসায়ী। ঘোষ দম্পতির অভিযোগ, গত রবিবার তাঁরা মোবাইলে Paytm ডাউনলোড করেছিলেন। অর্পিতা দেবীর নামে থাকা ইন্ডাসইন্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের যাবতীয় নথি দিয়ে Paytm ওয়ালেটে দশ হাজার টাকাও রাখা হয়। ৩১ ডিসেম্বর তাঁদের মোবাইলে KYC ও ক্রেডিট কার্ডের নম্বর চেয়ে পাঠিয়ে একটি মোবাইল নম্বর থেকে মেসেজ আসে। তাঁরা তা ওই নম্বরে পাঠিয়েও দেন। তাঁদের প্লে-স্টোর থেকে ‘কুইক সার্ভিস’ নামে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়। মিনিট দুয়েকের মধ্যেই অর্পিতা দেবীর নামে থাকা ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ধাপে ধাপে প্রথমে ২০ হাজার, পরে আরও ২০ হাজার, তারপর ৩৮ হাজার এবং শেষে আরও ৮০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। তাঁদের আরও অভিযোগ, পেটিএম ওয়ালেটে রাখা দশ হাজার টাকাও কিছুক্ষণের মধ্যেই তুলে নেয় প্রতারকরা।
সুদীপ্তবাবু জানিয়েছেন, ব্যাংকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা ক্রেডিট কার্ডটি ব্লক করে দেওয়া হয়। মাত্র কয়েকদিন আগেই Paytm অ্যাপটি ব্যবহার শুরু করেছিলেন ওই দম্পতি। মাত্র একদিনের মধ্যেই কীভাবে তা প্রতারকদের হাতে চলে গেল এবং তাঁদের ফোন নম্বর জেনে প্রতারকরা পেটিএমে ব্যবহার করা ওই মোবাইল নম্বরে কীভাবে মেসেজ পাঠালো সেই প্রশ্নই তুলছেন ওই দম্পতি। পুলিশের পাশাপাশি পেটিএম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁরা পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও সুরাহা না হওয়ায় উদ্বিগ্ন ওই দম্পতি।
তবে ইতিমধ্যেই বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন অর্পিতা দেবী। তাঁর কথায়, প্রতারকরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানিয়েছেন, যে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে পুরোটাই ফিরিয়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে টাকা কেটে নেওয়ার মেসেজগুলিও ফোন থেকে মুছে ফেলার আবেদন জানিয়েছেন প্রতারকরা। প্রতারকরা জানিয়েছে, ওই মেসেজগুলি না মুছলে পেটিএমের পক্ষ থেকে অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরত পাঠানোর কোনও মেসেজই মোবাইলে ঢুকবে না।
যদিও ওই দম্পতি মোবাইলে আসা কোনও মেসেজই ডিলিট করেননি। প্রতারকদের তরফে আর যোগাযোগ করা হয়নি ঘোষ দম্পতির সঙ্গে। ওই দম্পতিও চেষ্টা করে যোগাযোগ করতে পারেননি। পেটিএম কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন। তাঁরাও এ ধরনের প্রতারণার কথা জেনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। পেটিএমের তরফেও শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.