ধীমান রায়,কাটোয়া: বনমহোৎসব এবং ছেলের অন্নপ্রাশন৷ একইদিনে দুই অনুষ্ঠানের সুযোগ হাতছাড়া করলেন না কাটোয়ার শিক্ষক দম্পতি৷ বনমহমোৎসবের পর অরণ্য সপ্তাহ সূচনার দিনই অন্নপ্রাশনে আমন্ত্রিতদের হাতে উপহার হিসেবে এই দম্পতি তুলে দিলেন বৃক্ষ চারা৷ প্রায় শ চারেক নিমন্ত্রিতের প্রত্যেককে একটি করে মেহগনি গাছের চারা দিয়ে তাঁদের আরজি, ‘বৃক্ষরোপণ করুন। জল অপচয় বন্ধ করুন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করুন।’
কাটোয়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার কলেজপাড়ার বাসিন্দা সন্দীপ দাস ও তাঁর স্ত্রী শ্রাবণী দাস দু’জনই প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। সন্দীপবাবু কাটোয়ার রোণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং শ্রাবণীদেবী পলসোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তাদের প্রথম সন্তান হষ্ণিতের অন্নপ্রাশন ছিল রবিবার৷ কাটোয়ার ডাকবাংলো রোডের একটি লজে অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান করা হয়। প্রায় চারশোর কাছাকাছি আমন্ত্রিতকে অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এদিন সন্তানকে সামনে রেখেই শিক্ষক দম্পতি নিমন্ত্রিতদের হাতে একটি করে বৃক্ষচারা তুলে দিলেন। আরজি জানালেন, ‘পরিবেশকে বাঁচাতে আমরা সকলে যেন সচেতন হই।’ যে ব্যাগে চারাগাছটি দেওয়া হয়, তার একদিকে লেখা পরিবেশ বাঁচানোর স্লোগান, অপরদিকে ছেলের অন্নপ্রাশনের ভোজের মেনু।
সন্দীপবাবুর কথায়, ‘কয়েকদিন আগে আমাদের পাড়ায় কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবীকে পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রচার করতে দেখছিলাম। তখনই মনে হয়েছিল, পরিবেশ রক্ষায় সকলেরই দায়িত্ব করেছে। সেদিনই ঠিক করি, ছেলের অন্নপ্রাশনের দিনেও কিছু না কিছু করব।’ স্থানীয় বাসিন্দা সুজয় দাস বলেন, ‘সন্দীপবাবু আমার বহুদিনের পরিচিত। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী মিলে যে দৃষ্টান্ত রাখলেন, তা থেকে সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত।’ শ্রাবণীদেবী বলেন, ‘পরিবেশ বাঁচলে তবেই সকলে বাঁচতে পারব। আমরা যদি এখন থেকে পরিবেশের কথা না ভাবি, তাহলে ভাবী প্রজন্মকে বিরাট সংকটের মধ্যে পড়তে হবে।’
ছবি: জয়ন্ত দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.