জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: বিয়ের আসরেও বাদ গেল না CAA-NRC‘র প্রতিবাদ। বরং বলা যায়, বিবাহ অনুষ্ঠানকেই তাঁরা বেছে নিলেন প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে। কেন তাঁরা বিয়ের মতো এক ব্যক্তিগত বিষয়ের সঙ্গে রাজনীতিকে জড়িয়ে ফেললেন, সেই প্রশ্নের উত্তরও খুব স্পষ্ট। রাজনৈতিক দলের দুই নেতানেত্রী পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হয়েছেন যে। তাই সেখানে এমন রাজনৈতিক বিরোধিতা খুব অপ্রত্যাশিত নয় বলেই মনে করছেন আমন্ত্রিতরা।
পাত্র – বসিরহাট পৌরসভার ১৯নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ইলিয়াস সর্দার। আর পাত্রী – মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য তথা হোসনে আরা বুলবুল। শুক্রবার তাঁদের বিয়ের আসর সেজে উঠল অন্যভাবে। বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখা গেল, মূল মঞ্চের পিছনে বড় বড় অক্ষরে লেখা – NO NRC,NO CAA, NO NPR.এমনকী খাবারের মেনু কার্ডেও সেই একইভাবে প্রতিবাদ। এসব দেখে আমন্ত্রিতদের মধ্যেই ফিসফাস, গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। সকলেরই মনে প্রশ্ন ওঠে যে বিয়ের মতো শুভ অনুষ্ঠানের সঙ্গে আবার গুরুতর রাজনৈতিক ব্যাপার জড়িত কেন?
সমবেত আমন্ত্রিতদের অন্তরের ওই প্রশ্ন নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন দম্পতি। তাঁরা বললেন, ” দাম্পত্য জীবনে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই একসঙ্গে পথ চলা শুরু আমাদের। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি যে আজ শুধু বিয়ের মঞ্চ থেকে নয়, এসব নিয়ে লাগাতার প্রতিবাদ চালিয়ে যাব মানুষকে সচেতন করার বার্তা নিয়ে। এসব সকলের বোঝা দরকার।” তাঁদের এই কথা শুনে এই অভিনব প্রতিবাদকে একবাক্যে বাহবা দিলেন সকলে। শনিবার তাঁদের রিসেপশনের অনুষ্ঠানে তাঁরা হাসিমুখেই যোগ দিলেন।
এর আগে এনআরসি, সিএএ বিরোধিতায় কখনও বিয়ের কার্ডে, কখনও পেপার ন্যাপকিনে ‘NO NRC’ লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন একাধিক দম্পতি। সাম্প্রতিককালে এই বিষয়টি নিয়ে সর্বস্তরে সচেতনতা এতটাই বেড়েছে যে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তেও তার প্রভাব পড়ছে। তবে ইলিয়াস সর্দার আর হোসনে আরা বুলবুলের এই প্রতিবাদ নিছকই লোকদেখানো নয়, একেবারে খাঁটি রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেই তাঁদের এই প্রতিবাদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.