সৌরভ মাজি, বর্ধমান: যুগলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে। বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার হয়েছে যুগলের দেহ। মিলেছে কিছু চিঠি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই লোকনাথ বৈরাগ্যের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল বছর ষোলোর রূপসা খাতুনের। দুজনেই মঙ্গলকোটের বেলগ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগ, ভিনধর্মী হওয়ায় তাদের সম্পর্ক মানতে নারাজ ছিল দুই পরিবারই। এই নিয়ে পরিবারের সঙ্গে মনোমালিন্যও চলছিল প্রেমিক যুগলের। বুধবার রাতে খাওয়াদাওয়া করে মায়ের সঙ্গে ঘুমোতে যায় রূপসা। রাত ২ টো নাগাদ তাঁর মা টের পান, ঘরে নেই সে। পরের দিন সকালে শুরু হয় খোঁজাখুজি। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে গ্রাম থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে একটি মাঠের পাশে একটি গাছে যুগলকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ গিয়ে দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে কয়েকটি চিঠি। তাতে লেখা রয়েছে, “হিন্দু হোক বা মুসলিম, সবার রক্ত লাল। আমরা জানি তোমরা এর অর্থ বুঝবে না। বুঝতে চাইলেও সমাজের লোক তোমাদের বুঝতে দেবে না। তাই আমরা দু’জনে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলাম।” সেই চিঠিতে লেখা ছিল তাঁদের অন্তিম ইচ্ছা। তারা আরজি জানিয়েছিল, মৃত্যুর পরে তাদের যেন এক জায়গায় রাখা হয়। ঘটনার জেরে বাকরুদ্ধ পরিবারের সদস্যরা। তারা কেউই আশা করতে পারেননি এই পরিণতি। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তবে মৃত কিশোর-কিশোরীর পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে একে অপরকে ভালবেসে যেভাবে আত্মত্যাগের পথে হাঁটল তাঁরা, তা এলাকায় রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.