বিপ্লব দত্ত, নদিয়া: প্রেম করে বিয়ে করেছে ঠিকই। কিন্তু, জামাই বড্ড অলস। আলস্য এতটাই যে, কাজ করার ভয়ে জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়িতে এসে ফেরার নামই করছিলেন না। এদিকে জামাইয়ের খাতিরযত্ন করতে গিয়ে শ্বশুরের নিঃস্ব হওয়ার জোগাড়। সেকথা জামাইকে বলেও ফেলেছিলেন। তাই নিয়ে তুমুল অশান্তি। কয়েক ঘণ্টার পর বন্ধ ঘর থেকে মিলল অন্তঃস্বত্বা মেয়ে ও জামাইয়ের মৃতদেহ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নদিয়ার শান্তিপুরে। জামাইয়ের বিরুদ্ধে মেয়েকে খুনের অভিযোগ করেছেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।
[আঙুল নেই, তাই আধার অধরা! খনি শ্রমিকের বন্ধ পেনশন ফেরাতে উদ্যোগ বাবুলের]
মৃত দম্পতির নাম বিশ্বজিৎ বিশ্বাস ও মিতালি বিশ্বাস। নবদ্বীপের ভালুকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ। পেশায় তিনি ডেকরেটর কর্মী। মাত্র দশ মাস আগে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন বিশ্বজিৎ ও মিতালি। এবছরই ছিল তাঁদের প্রথম জামাইষষ্ঠী। একদিন আগেই স্ত্রীকে নিয়ে শান্তিপুরের মেলেরমাঠ বাগানিপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে চলে এসেছিলেন জামাই। কিন্তু, জামাইষষ্ঠীর পর তিন-চার দিন কেটে গেলেও ফেরার নামগন্ধ করছিলেন না তিনি। মিতালির বাবা পেশায় ভ্যানচালক। পরিবারের আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল নয়। জামাই বিশ্বজিতের খাতিরযত্ন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। এদিকে মিতালি আবার তিনমাসের অন্তঃস্বত্বা। শনিবার মেয়েকে রেখে জামাইকে ফিরে যেতে বলেছিলেন শাশুড়ি। মিতালির পরিবারের লোকেদের দাবি, ফিরে যেতে বলায় বিশ্বজিতের গোঁসা হয়। স্ত্রীর সঙ্গে একপ্রস্থ কথা কাটাকাটি হয় তাঁর। মিতালিকে নিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন বিশ্বজিৎ। মিতালির মা বিপ্লবীদেবী তখন পাশেই আর এক মেয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। ভ্যানচালক শ্বশুর নিখিল বিশ্বাস কাজে বেরিয়েছিলেন। সকাল দশটা নাগাদ বাড়ি ফিরে শাশু়ড়ি দেখেন, ঘরের দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপরই ঘরের জানলা দিয়ে উঁকি মেরে বিপ্লবীদেবী দেখেন, সিলিং থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে জামাই। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখা যায়, ঘরের মধ্যে মাটিতে পড়ে রয়েছে মিতালির দেহ। খবর দেওয়া যায় শান্তিপুর থানায়। মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। কিন্তু, কী কারণে এই জোড়া মৃত্যু? তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, নিজের বাড়িতে ফিরলে কাজে যোগ দিতে হবে। এই আশঙ্কায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে আত্মহত্যা করেছে অলস জামাই। যদিও বিশ্বজিৎ ও মিতালির একসঙ্গে আত্মঘাতী হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তদন্তে শান্তিপুর থানার পুলিশ।
[বর্ষা আসুক বাংলায়, বৃষ্টি বন্দনায় পান্তা উৎসবে মাতলেন চুঁচুড়াবাসী]
ছবি- সুজিত মণ্ডল
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.