জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: ভাটপাড়ার পর এবার কি উত্তর ২৪ পরগনার আরও একটা পুরসভা হাতছাড়া হতে চলেছে তৃণমূলের? শুক্রবার বনগাঁ পুরসভার ১১ জন তৃণমূল কাউন্সিলর পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনায়, এমনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে৷
[ আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটে হারের জের, জেলা সভাপতির পদ খোয়ালেন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ]
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে বনগাঁর মহকুমা শাসকের কাছে পুরসভার বর্তমান পুরপ্রধান শংকর আঢ্যর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন ওই ১১ জন কাউন্সিলর। সেই আবেদনে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান তাঁরা। যথারীতি এই ঘটনা জেলার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। জানা গিয়েছে, ২২ আসন বিশিষ্ট বনগাঁ পুরসভায় তৃণমূলের দখলে রয়েছে ২০টি আসন৷ বাকি দুটির মধ্যে একটি কংগ্রেস এবং একটি সিপিএমের দখলে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে বনগাঁ পুরসভার ২১টিতেই পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। এই ওয়ার্ডগুলিতে লিড পেয়েছে বিজেপি৷ এই ফলাফলের পরেই প্রকাশ্যে চলেছে বনগাঁ পুরসভায় তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব৷
[ আরও পড়ুন: লাগাতার তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে থমথমে খেজুরি, অপসারিত ওসি ]
অনস্থা প্রস্তাব পেশ করা সুমঞ্জনা মুন্সি, মনতোষ নাথ ও অভিজিৎ কপুরিয়ার মতো কাউন্সিলর জানান, ‘‘পুরপ্রধানের উপর এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ৷ ওনার ব্যবহারে অতিষ্ট হয়ে মানুষ আমাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে৷ পুর এলাকার উন্নয়নে তেমন কোনও কাজ করেননি উনি৷’’ পুরপ্রধান শংকর আঢ্যর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ও আর্থিক দুর্নীতিরও অভিযোগে করেছেন কাউন্সিলররা৷ যদিও এই বিষয়ে পুরপ্রধানের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ তবে জেলা তৃণমূলের সম্পাদক গোপাল শেঠ জানান, এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়৷ সবার সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা হবে৷ শাসকদলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আঁচ পেয়েই ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি৷ জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবদাস মণ্ডল জানান, ‘‘অত্যাচারী শাসকের বিনাশ ঘটল৷ এলাকার মানুষ এবার শান্তি পাবে৷ এতদিন মানুষ আতঙ্কে বাস করছিলেন এবার দুষ্টের দমন হল৷ যাঁরা একাজ করলেন, তাঁদের সাহসকে কুর্নিস৷ এই কাউন্সিলররা বিজেপিতে যোগ দিতে চাইলে, সেই বিষয়টি ভেবে দেখব৷’’ যদিও এই প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছেন ১১ জন বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলর৷ এখনও তৃণমূলেই রয়েছেন বলে তাঁদের দাবি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.