ফাইল ফটো
মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: নিজের শরীরের ভিতর প্রাণের অস্তিত্ব টের পাচ্ছিলেন। দিব্যি উপভোগ করছিলেন মাতৃত্বের স্বাদ। আচমকাই বিপদের হাতছানি। অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রসূতি। তড়িঘড়ি বেলিলিয়াস রোডের বাসিন্দা ওই মহিলাকে ভরতি করা হয় উলুবেড়িয়ার ফুলেশ্বরের বেসরকারি হাসপাতালে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জানা যায় করোনা আক্রান্ত তিনি। শুরু হয় চিকিৎসা। সাতদিন পর সুস্থ পুত্রসন্তানের জন্মও দেন তিনি। দ্বিতীয়বার পরীক্ষা করা হয় মহিলা এবং সদ্যোজাতের। তবে ওই রিপোর্ট হাতে আসার পর জানা যায় করোনামুক্ত তাঁরা। স্বস্তিতে চিকিৎসক এবং পরিজনেরা। মহিলাকে শুক্রবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে, হাততালি দিয়ে বাড়ি পাঠানো হল ওই মহিলাকে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ এপ্রিল করোনা পজিটিভ হয় তাঁর। তাঁকে ফুলেশ্বরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শুরু হয় চিকিৎসা। দিনসাতেক পর ২০ এপ্রিল ওই মহিলার প্রসব বেদনা শুরু হয়। চিকিৎসকদের তৎপরতায় পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। তারপর হাসপাতালেই ছিলেন মা এবং সদ্যোজাত। আবারও পরীক্ষা করা হয় দু’জনের। তাতেই দু’জনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপর শুক্রবার দু’জনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সত্যিই রাজকীয় বিদায়। হাসপাতালের গ্রাউন্ড ফ্লোরে লাইনে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছেন হাওড়ার জেলা শাসক মুক্তা আর্য। উপস্থিত রয়েছেন গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপার সৌম্য রায়, মহকুমা শাসক তুষার সিংলা, উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার তৃণমূলের সভাপতি পুলক রায়। এছাড়া রয়েছেন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী-সহ গন্যমান্যরা। হাততালি দিচ্ছেন সকলেই। সঙ্গে আবেগভরা কন্ঠ গেয়ে উঠছে রবীন্দ্র সংগীত, “তরীখানি বাইতে গেলে মাঝে মাঝে তুফান মেলে, মরার আগে মরব না। সঙ্গে পুষ্পবৃষ্টি।” করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার আগে ওই প্রসূতি এবং তার দিন দশেকের পুত্রসন্তানের জন্য রাজকীয় বিদায় সম্ভাষণের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার বিকেলে বেলিলিয়াস রোডের বাসিন্দা ওই মহিলা বাড়ি ফেরেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.