সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: কোভ্যাক্সিনের (Covaxin) মানব ট্রায়ালের ডোজ নিয়ে বুধবার সন্ধেয় দুর্গাপুরে (Durgapur) ফিরলেন চিরঞ্জিত ধীবর। সুস্থভাবে ছেলেকে ফিরে পেয়ে আপ্লুত পরিবার ও প্রতিবেশীরা। জানা গিয়েছে, আপাতত বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে ওই শিক্ষককে।
কোভ্যাক্সিনের ‘হিউমান ট্রায়াল’-এর প্রথম পর্বের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর এ-জোনের শিবাজি রোডের বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক চিরঞ্জিত ধীবর। সেই আবেদন মঞ্জুর হলে ২৪ জুলাই ওড়িশার ভুবনেশ্বরের ICMR অনুমোদিত পরীক্ষা কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ওই শিক্ষক। তাঁর শরীর আদৌ কোভ্যাক্সিনের উপযোগী কিনা তা জানতে ২৫ জুলাই মোট ৫০ রকমের শারীরিক পরীক্ষা করা হয় চিরঞ্জিতের। রিপোর্ট ইতিবাচক থাকায় ২৮ জুলাই বন্ডে সই করানো হয় তাঁকে। এরপর ২৯ জুলাই চিরঞ্জিতের শরীরে প্রথম কোভ্যাক্সিন প্রয়োগ করা হয়। এরপর পর্যবেক্ষনে রাখা হয় তাঁকে। সাত দিনের মাথায় রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ওই সংস্থার ‘প্রিভেনশন এন্ড থেরাপিউটিক ক্লিনিকাল ট্রায়াল ইউনিট’।
জানা গিয়েছে, গত ১২ আগস্ট চিরঞ্জিতের শরীরে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয় কোভ্যাক্সিনের। এই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পরই তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করছিলেন বলে বৃহস্পতিবার জানালেন চিরঞ্জিত। বললেন, “হালকা জ্বর ও মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছিল বিকেল থেকে। চিকিৎসকদের তা জানালে তাঁরা এটা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া বলেই জানান।” ফের রক্তের নমুনা নিয়ে চিরঞ্জিতকে মুক্তি দেওয়া হয় ২৬ আগস্ট সকালে। রাতেই তিনি ফেরেন বাড়িতে। ছেলেকে কাছে পেয়ে আপ্লুত বাবা তপন কুমার ধীবর ও মা প্রতিমা ধীবর। জানা গিয়েছে, প্রথম ভ্যাকসিন দেওয়ার ঠিক ১০৪ ও ১৯৪ তম দিনে ফের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করাতে ওই শিক্ষককে যেতে হবে ভুবনেশ্বরে। চিরঞ্জিতের কথায়, “প্রথম ডোজের আগে একটু শঙ্কা থাকলেও উপস্থিত চিকিৎসকদের অনুপ্রেরনায় পরে আর কোনও ভয় হয়নি। দেশের জন্যে অন্য লড়াইয়ে জিতে এসেছি আমার কাছে এটাই বড় পাওনা।” আপাতত ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের চিকিৎসকদের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে তাঁকে। প্রাণায়াম, যোগাসন করতে হবে। শারীরিকভাবে কোন অসঙ্গতি দেখলেই জানাতে হবে তাদের। যে কোনও ওষুধ খেতে গেলেই নিতে হবে পরামর্শ। তবে স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া করা যাবে বলেই জানিয়েছেন ‘করোনাযোদ্ধা’ চিরঞ্জিত ধীবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.