ফাইল ছবি।
নব্যেন্দু হাজরা: রাস্তায় বাসের (Bus) সংখ্যা এমনিতেই কমছে দিন কে দিন। যেগুলো নামছে তাতেও যাত্রী সংখ্যা সামান্যই। তাদের মধ্যে আবার অনেকেই বাস ভাড়া দিয়েও টিকিট নিতে গড়িমসি করছেন। কারণ সংক্রমনের ভয়। ফলে কাগজের টিকিটও আর সেভাবে বিকোচ্ছে না বাসে। প্রয়োজন পড়ছে না নতুন টিকিটের। আর তার ফলেই কার্যত বন্ধ হতে বসেছে একের পর এক টিকিট ছাপানোর কারখানা।
লকডাউনে টানা দু’মাস বন্ধ থাকার পর বাস চালু হলেও তার সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। কারন অফিস কাছারি ছিল বন্ধ। পরে তা খুললেও বেশিরভাগ যাত্রীই গণপরিবহণ ব্যবহার না করে বাইক, স্কুটি, সাইকেলে অফিস যাতায়াত করছেন। তাই যাত্রী হচ্ছিল না বাসে। কমছিল টিকিট (Ticket) বিক্রি। আর মানুষ ভাড়া দিলেও টিকিট নিচ্ছিলেন না। তাই নতুন টিকিট প্রয়োজনও হচ্ছে না। পুরনো টিকিটেই কাজ হচ্ছে। আগে কোনও ছাপাখানা থেকে মাসে যেখানে ২৬ থেকে ২৭ লক্ষ টিকিট বিক্রি হত সেখানে এখন মেরেকেটে লাখ পাঁচেক টিকিট বিক্রি হয়। কোনও কোনও জায়গায় সেটাও হচ্ছে না। তাই ঝাঁপ পড়েছে সেই কারখানার। শ্যামবাজার, রাসবিহারি, বালিগঞ্জ, কালীঘাট, শ্রীরামপুর, বজবজ, শিবপুর, আন্দুল, সালকিয়ার মতো অন্তত খান কুড়ি জায়গায় এই কাগজের টিকিট ছাপানোর কারখানা আছে। লেটার প্রেস মেশিনের সাহায্যে যেখানে ছাপানো হয় টিকিট। যার অধিকাংশই বন্ধ এখন।
অনেকেই এই ব্যবসা ছেড়ে অন্য কাজে চলে গিয়েছেন। কথা হচ্ছিল গৌতম পাইনের সাথে। শিবপুরে তাঁর ছাপাখানার ঝাঁপ পড়েছে লকডাউন। বলেন, “ছ’জন কর্মচারী ছিল। কোথা থেকে মাইনে দেব? ওই খুচরো কিছু টিকিট বিক্রি করলে তো কারখানা চালানো যায় না। আমার কারখানার মতো বহু টিকিট ছাপার কারখানাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ২০ বছরের ব্যবসা। লকডাউন সব শেষ করে দিল।” বজবজে প্রায় ৩০ বছর ধরে এই কাজে যুক্ত ভাস্কর মাইতি। বলেন, “পূর্বপুরুষের ব্যবসা। কোনও ক্রমে চালাচ্ছি। বাবা আর আমি মিলে এখন অল্প কিছু কাজ করি। কর্মচারী রেখে কাজ করা অসম্ভব। রোজগার নেই কোনও। যে কোনও দিন বন্ধও হয়ে যেতে পারে।” বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগে যে সংখ্যক যাত্রী বাসে হত, এখন তো তার অর্ধেকের অর্ধেকও হয় না। ফলে টিকিটও বিক্রি হয় না। সংক্রমণের ভয়ে টিকিট নিচ্ছেন না অনেকেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.