শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: দাসপুরের করোনা আক্রান্ত যুবক নিজামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। রোগ সংক্রমণের আশঙ্কায় হোম কোয়ারেন্টাইনের বদলে গোটা গ্রামকেই পাঠানো হল কোয়ারেন্টাইনে। গোটা গ্রামটিকেই বহির্জগত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। গ্রামে ঢোকার প্রত্যেকটি রাস্তা সিল করে দিয়েছে পুলিশ। অনুমতি ছাড়া গ্রামের ঢোকা এবং বেরনোর রাস্তায় পা রাখা যাবে না বলেই মাইকে প্রচার করছেন পুলিশকর্মী। গ্রামে বসেছে পুলিশ পিকেট।
দাসপুর এক নম্বর ব্লকের নন্দনপুর দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজামপুর গ্রাম। এই গ্রামেরই যুবক মুম্বইয়ের মসজিদবাজারে সোনার কাজ করতেন। গত ২২ মার্চ তিন বন্ধুর সঙ্গে তিনি বাড়ি ফেরেন। তারপরই তাঁর শরীরে করোনার উপসর্গ ধরা পড়ে। গত ২৮ মার্চ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষায় ধরা পড়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ। যুবকটিকে ভরতি করা হয়েছে কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। তাঁর পরিবারের ৬ জনকে পাঠানো হয়েছে সরবেড়িয়া বি সি রায় হাই স্কুলে তৈরি ৬০ শয্যার কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। আর গোটা গ্রামটিকে সিল করে দেওয়া হয়।
তারপরই আতঙ্কের ছায়া গোটা দাসপুরে। নিজামপুর গ্রামটির মধ্য দিয়ে চলে গিয়েছে ওল্ড কাঁসাই নদী। কাঁসাই নদীর পশ্চিম পাড়ে যুবকটির বাড়ি। এই পাড়ে রয়েছে ১৫২টি পরিবার। নদী পারাপারের সমস্ত সাঁকো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যাতে কেউ সাঁকো পেরিয়ে গ্রামে ঢুকে পড়তে না পারে বা বাইরে চলে যেতে না পারে, তাই এই ব্যবস্থা। গ্রামে ঢোকার সবকটি রাস্তাকে সিল করে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি পরিবারকে হোম কোয়েরেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। এভাবেই থাকতে হবে অন্তত ১৪ দিন। রয়েছে কড়া পুলিশি নিরাপত্তা। জীবাণুনাশক স্প্রে করার কাজও শুরু হয়েছে।
দাসপুরের বিডিও বিকাশ নস্কর বলেন, “নিজামপুর গ্রামটিকে আমরা ১৪ দিনের জন্য সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছি। পুলিশ পিকেট বসেছে। প্রত্যেকটি পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশের অনুমতি ছাড়া কেউ ওই গ্রামে যেমন ঢুকতে পারবে না, তেমনই বেরতেও পারবেন না। গ্রামবাসীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পুলিশকর্মীরা সরবরাহ করবেন।” দাসপুর থানার ওসি সুদীপ ঘোষাল মাইক প্রচার করে জানিয়ে দিয়েছেন, “ নিজামপুর গ্রাম ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকবে। খাবার, অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী সবই সরবরাহ করবে প্রশাসন। ”
দাসপুর এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুনীল ভৌমিকের বাড়ি নিজামপুর গ্রামের পাশেই বসন্তপুর গ্রামে । তিনি বলেন, “ প্রশাসনের নির্দেশ মেনে নিজামপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া অংশটিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে। প্রায় দেড়শোর মতো পরিবার রয়েছে এই পাড়ায়। প্রতিটি পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। আমরা পঞ্চায়েতের লোকজনও রয়েছি।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.