ছবি: প্রতীকী
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: দীর্ঘ সময় ভিন রাজ্যে আটকে থেকে বাড়ি ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। আর তাতেই বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা। এবার সুন্দরবন কাঁপছে করোনা জ্বরে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনের শরীরে মিলেছে ভাইরাসের সন্ধান।
আমফানের তাণ্ডবে চলতি মাসেই বিধ্বস্ত হয়েছে সুন্দরবন (Sundarban)। এবার পালা করোনার। দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিকেরা গ্রামে ফেরার পরেই গতি বাড়িয়েছে সংক্রমণের মাত্রা। মুম্বই, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ থেকে ফিরছেন এই পরিযায়ীরা। দীর্ঘ লকডাউনে ভিন রাজ্যে আটকে থাকার পর আর সরকারি সাহায্যে আশায় অপেক্ষা করতে চান না তাঁরা। ভাড়া গাড়ি করেই অবাধে গ্রামে প্রবেশ করছেন শ্রমিকরা (Migrant Workers)। নিজেদের উদ্যোগে বাড়ি ফেরায় প্রশাসনের নিয়মকানুনকে অগ্রাহ্য করতেও শুরু করেছেন পরিযায়ীরা। কেউ আসছেন উপসর্গ নিয়ে কেউ বা উপসর্গহীন হয়ে। এর ফলে আতঙ্কে কাঁটা এলাকাবাসী। প্রশাসনের বিধি মেনে স্থানীয়রা বারণ করলেই পরিযায়ীদের সঙ্গে তাঁদের বচসা পৌঁছচ্ছে চরমে। হোম কোয়েরেনটাইম তো দূর অস্ত। অনেকক্ষেত্রেই ভিন রাজ্য থেকে ফিরে পরিযায়ী শ্রমিকেরা গ্রামে প্রবেশের আগে ন্যূনতম স্বাস্থ্যপরীক্ষাটুকু ও করাচ্ছেন না। মিশে যাচ্ছেন মানুষের ভিড়ে। বাজার করছেন গ্রামে ফিরেই। এমনকি ত্রানের লাইনে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয়দের সঙ্গে। ফলে অবাধে ছড়াচ্ছে করোনার বিষ। ঘূর্ণিঝড় আমফানের ধ্বংসলীলার থেকে সুন্দরবনের বাসিন্দাদের এখন তাড়া করে বেড়াচ্ছে মারণ ভাইরাসের আতঙ্ক।
স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সুন্দরবনের বিভিন্ন ব্লকেই সংক্রমণ থাবা বসিয়েছে। ইতিমধ্যে গোসাবা ব্লকে ১টি, বাসন্তীতে ২টি, ক্যানিং ১ ব্লকে পাঁচটি ও ক্যানিং দু নম্বর ব্লকের চারটি করোন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। আরো কয়েকজনের রিপোর্ট আসার অপেক্ষায় রয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। শুধু ক্যানিং মহকুমা নয়, সংক্রমণ ছড়িয়েছে কুলতলী, পাথরপ্রতিমা, জয়নগর, কাকদ্বীপ-সহ বিভিন্ন এলাকায়। এ বিষয়ে ক্যানিং মহাকুমার অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা প্রবীর কুমার হালদার জানান, “কয়েকজনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে স্বাস্থ্য বিধি মেনে আমরা সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।” গোসাবার পাঠানখালী আক্রান্তের সন্ধান পাওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফেরি পারাপার, স্থানীয় বাজার। গোসাবা থানা বাজার-সহ বিভিন্ন এলাকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানায় স্থানীয় প্রশাসন। সব মিলিয়ে জেরবার অবস্থা সুন্দরবনের স্থানীয়দের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.