ছবি: প্রতীকী
ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: সব জল্পনার অবসান। জানুয়ারি মাসেই পশ্চিমবঙ্গের হাতে আসছে কালান্তক করোনা ভাইরাসের মৃত্যুবান ‘কোভ্যাকসিন’। আগামী মাসেই দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই করোনা টিকার তৃতীয় দফায় ট্রায়াল শুরু হবে। হায়দরাবাদের ‘ভারত বায়োটেক’ ও আইসিএমআরের (ICMR) যৌথ উদ্যোগে সেই ট্রায়ালের অন্যতম শরিক বাংলাও। আর ঠিক চার মাসের মাথায়, জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ভ্যাকসিন পাবে পশ্চিমবঙ্গ। তবে পশ্চিমবঙ্গ একা নয়, সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ, চেন্নাই, হায়দরাবাদ এবং দিল্লির হাতেও পৌঁছে যাবে এই ভ্যাকসিন। মার্চ মাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে গোটা দেশে পৌঁছে যাবে করোনার প্রতিষেধক। একবার ভ্যাকসিন শরীরে ঢুকলেই করোনার বিরুদ্ধে তৈরি হবে জীবনভর প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনটাই দাবি নাইসেডের।
দেশের শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থা আইসিএমআরের প্রথম সারির বিজ্ঞানী তথা নাইসেড ডিরেক্টর ডা শান্তা দত্ত মঙ্গলবার বলেছেন, “ভারত বায়োটেক সংস্থার করোনা ভ্যাকসিনের আগস্টের ট্রায়াল সফল। সেপ্টেম্বর মাসে দেশের বাছাই করা পাঁচটি শহরে তৃতীয় দফার ট্রায়াল হবে। সেই ট্রায়ালে অন্যতম অংশীদার পশ্চিমবঙ্গ।” অন্তত এক লক্ষ নাগরিক এই ট্রায়ালে অংশ নেবেন। নাইসেড অধিকর্তার কথায়, “এই ট্রায়াল সফল যে হবে, সে বিষয়ে আশাবাদী সকলে। তার ঠিক চারমাস পর পশ্চিমবঙ্গে করোনা ভ্যাকসিন আসবে। শুরু হবে গণটিকাকরণ।” শান্তা দত্তের কথায়, “নিয়ম অনুযায়ী তৃতীয় দফায় ভ্যাকসিনের ফল কেমন হল তা যাচাই করতে চার থেকে ছ’মাস সময় লাগে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমতি সাপেক্ষে জানুয়ারি মাসেই করোনা ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।” বস্তুত, আইসিএমআর করোনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষা থেকে উৎপাদন-বিপণন সমস্ত বিষয়টি যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রোটোকল মেনে আটঘাট বেঁধে করছে তাও কার্যত এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন নাইসেড অধিকর্তা।
সেপ্টেম্বরের ট্রায়ালে যে এক লক্ষ নাগরিক অংশ নেবেন তাঁদের মধ্যে যেমন স্বাস্থ্যকর্মী বা ‘ফ্রন্ট লাইন ওয়ারিয়র’ আছেন, তেমনই বহু সাধারণ নাগরিক স্বেচ্ছায় থাকবেন। ICMR-এর ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ এপিডোমলজি’র অধিকর্তা ডা রামচন্দ্রন নিজে এই ট্রায়ালের তদারকি করছেন বলে নাইসেড সূত্রে খবর। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, দেশের মানুষ নিখরচায় এই ভ্যাকসিন কি পাবেন? উত্তরে নাইসেডের ডিরেক্টর শান্তা দত্ত বলছেন, “পরিকল্পনা রয়েছে জানুয়ারিতে ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অফ ইন্ডিয়া থেকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমোদনের পর অন্য প্রতিষেধকের মতোই গণটিকাকরণ কর্মসূচির আওতায় আসবে এই ভ্যাকসিন। আইসিএমআরের আরেক বিজ্ঞানী ডা এস আই গিরি এই ট্রায়ালের সঙ্গে জড়িত। তাঁর কথায়, “করোনা নিয়ন্ত্রণে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। রাজ্যগুলির সঙ্গে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবাকেও যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.