সৌরভ মাজি ও চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এবার গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে বাড়তি নজরদারি চালানো হবে। জনবহুল স্টেশনগুলিতে বিশেষ কাউন্টার ও শিবিরও খোলা হচ্ছে। বাইরে থেকে যাত্রীদের উপর নজরদারি, সন্দেহ হলে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও রেল মন্ত্রকের তরফে করোনা মোকাবিলায় এই বিশেষ পদক্ষেপ করেছে বলে জানা গিয়েছে।
বর্ধমান, আসানসোল ও দুর্গাপর এই দুই জেলার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে দিল্লি, মুম্বই-সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানের যোগাযোগ পথে রয়েছে এই তিন স্টেশন। অধিকাংশ দূরপাল্লার এক্সপ্রেস, মেল ট্রেন থামে এই তিন স্টেশনে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রতিদিন বহু মানুষ আসেন এখানে। আবার এখান থেকে বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়েও পড়েন। সেই কারণে এই স্টেশনগুলিতে করোনা মোকাবিলায় বাড়তি নজরদারি রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানান, বর্ধমান স্টেশনে এই নিয়ে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। বিশেষ কাউন্টার চালু করতে রেলের সঙ্গে আলোচনা করছে জেলা প্রশাসন। ট্রেন থেকে নামার পর সন্দেহ হলে বা কেউ নিজেই মনে করলে ওই ক্যাম্পে এসে সহায়তা নিতে পারেন করোনার বিষয়ে।
রেলের আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন রেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্টেশনে শিবির করা হবে। যদি কোনও যাত্রীকে করোনা সন্দেহ করা হয় তবে সেই যাত্রীকে শিবিরে এনে চিকিৎসা করানো হবে। তিনি জানান, রেলের হাসপাতালেও আইসোলেশন ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে রেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানাতে কর্মীদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতি আপাতত বন্ধ করা হয়েছে। জনসংযোগ আধিকারিক মান্তার সিং জানিয়েছেন, ৩১ মার্চ পর্যন্ত বায়োমেট্রিক হাজিরা বন্ধ থাকবে।
জেলা প্রশাসন ও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই তরফেই করোনা ভাইরাস নিয়ে সাধারণ মানুষ সচেতন করাকেই সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। জেলাজুড়ে লিফলেট, হোর্ডিং, পোস্টার দেওয়া হচ্ছে। করোনা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হওয়া, গুজবে কান না দেওয়ার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, রেল স্টেশনগুলি ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। তাই স্টেশনগুলিতেও সচেতনতার প্রচারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, দুই বর্ধমান জেলায় সম্প্রতি ৫০ জনেরও বেশি পুরুষ-মহিলা বিদেশ থেকে ফিরেছেন। চিন, জাপান, ভিয়েতনাম থেকে ফিরেছেন তাঁরা। কেউ কর্মসূত্রে সেখানে থাকতেন। কেউ বা বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁদের সকলকেই প্রশাসনের তরফে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.