Advertisement
Advertisement
গোপানাথ মেলা

করোনা আতঙ্কে ছেদ ৫০০ বছরের ঐতিহ্যে, বন্ধ হল অগ্রদ্বীপের গোপীনাথের মেলা

দোকালগুলি খুলে ফেলছেন ব্যবসায়ীরা।

Corona Scare: Centuries old Gopinath Mela Stalled this year
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:March 17, 2020 8:35 pm
  • Updated:March 17, 2020 8:35 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: করোনা আতঙ্কের জেরে ছেদ পড়ল ৫০০ বছরের ঐতিহ্যে। শেষপর্যন্ত এবছর বন্ধ রাখা হল পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার অগ্রদ্বীপের গোপীনাথের মেলা। মঙ্গলবার একথা জানালেন মেলা কমিটির সভাপতি সুব্রত চৌধুরি। তিনি বলেন, ”করোনা ভাইরাস নিয়ে কয়েকদিন ধরেই গোপীনাথের মেলা নিয়ে টালবাহানা চলছিল। রাজ্য প্রশাসন থেকে বেশি লোকজন জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রশাসন থেকে আমাদেরও বলা হয়েছিল যাতে মেলা বন্ধ রাখা হয়। তাই আমরা সবদিক বিবেচনা করে মেলা এবছর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে পূজার্চনা রীতি মেনেই হবে।”

মহাপ্রভূ শ্রীচৈতন্য স্মৃতি বিজড়িত অগ্রদ্বীপের গোপীনাথ। অগ্রদ্বীপের গোপীনাথের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শ্রীচৈতন্যদেবের পার্ষদ গোবিন্দ ঘোষ। জনশ্রুতি মহাপ্রভূ নীলাচলে যাত্রার সময় আরও কয়েকজন শিষ্যের সঙ্গে ছিলেন গোবিন্দ ঘোষ। ভাগীরথীর তীরে মহাপ্রভূ বিশ্রাম নিয়েছিলেন। তারপর সকলেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও মহাপ্রভূর নির্দেশে অগ্রদ্বীপে থেকে যান গোবিন্দ ঘোষ। তিনি গোপীনাথের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। কথিত আছে, গোবিন্দ ঘোষের মৃত্যুর আগে স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে কথা দিয়েছিলেন, মৃত্যুর পর তাঁর পারলৌকিক ক্রিয়া তিনিই করবেন। সেই থেকে প্রথা মেনে প্রতিবছর চৈত্রমাসের একাদশী তিথিতে গোবিন্দ ঘোষের প্রয়াণ দিবসে গোপীনাথ অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের মুর্তিকে বের করে আনা হয় গোবিন্দ ঘোশের সমাধিক্ষেত্রে। দেবতাকে কাচা পড়ানো হয়।

Advertisement

বিশ্বাস, গোপীনাথ স্বয়ং তাঁর ভক্ত গোবিন্দ ঘোষের শ্রাদ্ধ করেন। প্রতিবছর এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠান উপলক্ষ্যে বিরাট মেলা বসে। তিন থেকে সাড়ে তিনলক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। কমিটি সূত্রে জানা যায়, এবছর গোবিন্দ ঘোষের ৫১০তম প্রয়াণ দিবস। এবছর করোনা আতঙ্কে মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিন অগ্রদ্বীপ রেলস্টেশন, অগ্রদ্বীপের মেলা প্রাঙ্গণ প্রভৃতি এলাকায় ঘুরে করোনা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালায় কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন। ছিলেন কাটোয়ার মহকুমা শাসক প্রশান্তরাজ শুক্লা, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ত্রিদিব সরকার, কাটোয়া ২ বিডিও শমীক পাণিগ্রাহী-সহ অন্যান্যরা। তবে মেলা বন্ধ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন মহকুমা শাসক। তিনি বলেন, ‘আমরা করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষদের সচেতন করছি।’

এদিন অগ্রদ্বীপে দেখা যায়, মেলায় দোকান করার জন্য কয়েকজন ব্যবসায়ী এসেছিলেন তারা বাঁশ খুলতে শুরু করেছেন। অন্যদিকে গোপীনাথের পুজো স্বাভাবিকভাবে হলেও ভিড়ভাট্টা রয়েছে খুব কম। যেসব পুণ্যার্থী আগে থেকেই চলে এসেছিলেন তারাও বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। গোপীনাথের মেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মনমরা অগ্রদ্বীপবাসী।

ছবি: জয়ন্ত দাস

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement